রাজধানীর মিরপুরে একটি বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে লাগা আগুনে দগ্ধের ঘটনায় আব্দুল্লাহ (১৩) নামে আরেক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চারজনে। এর আগে চিকিৎসাধীন আব্দুল্লাহর বাবা-মা ও ছোট ভাই মারা যায়।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ৬টায় জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আব্দুল্লাহ।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. শাওন বিন রহমান জানান, আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল্লাহ মারা গেছে। তার শরীরের ৩৮ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় ২০ শতাংশ দগ্ধ নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে তার ছোট ভাই ইসমাইল। আর প্রতিবেশী স্বপ্নার ১৪ শতাংশ নিয়ে ভর্তি থাকলেও তার স্বামী শাহজাহানকে সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।
এর আগে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিভিন্ন সময়ে আব্দুল্লাহর মা রুমা আক্তার, বাবা আব্দুল খলিল ও ভাই মোহাম্মদ (১০) মারা যায়।
মৃত আব্দুল খলিলের ভাতিজি নাসিমা আক্তার রূপালী জানান, তাদের বাড়ি মুন্সিগঞ্জের সদর উপজেলার চর বাঙলাবাজার গ্রামে। তিন ছেলেসহ তার চাচা—চাচি মিরপুরের ওই বাসায় ভাড়া থাকেন। তাদের পাশের বাসায় ভাড়া থাকেন ওই দম্পতি। গত ২৪ নভেম্বর ভোরে তিনি খবর পান, ওই বাসায় গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে। তারা সবাই দগ্ধ হয়েছেন। পরবর্তীতে তাদেরকে উদ্ধার করে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়।
খলিলের ভায়রা আব্দুল হালিম জানা, ওইদিন ভোরে খলিল যখন মশার কয়েল জ্বালানোর জন্য দিয়াশলাই জ্বালান, তখনই জমে থাকা গ্যাসের কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
দগ্ধ শাহজাহান জানান, ওই রাতে তারা বাসায় ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোর আনুমানিক ৪টার দিকে হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। ঘুম ভাঙতেই দেখেন চারদিকে আগুন জ্বলছে। তাদের শরীরে আগুন লেগে গেছে। তখন নিজেরাই বাসার বাইরে বের হন।
তিনি জানান, তাদের বাসায় কোনো গ্যাস সিলিন্ডার নেই। বাসার সামনে দিয়ে গ্যাস লাইন রয়েছে। দুই দিন আগে রাস্তার পাশে সেই গ্যাস লাইনে হঠাৎ করে আগুন জ্বলে উঠেছিল। পরে স্থানীয়রা সে আগুন নেভান। তার ধারণা, সেই লাইন থেকে লিকেজ হয়ে তাদের রুমের ভেতর গ্যাস জমে ছিল। তার জন্য বিস্ফোরণ হয়েছে।
এর আগে, গত ২৪ নভেম্বর ভোরে মিরপুর—১১, ৫ নম্বর এভিনিউ, সি ব্লকের ১৬ নম্বর রোডের একটি বাসায় দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে দগ্ধ হন—রঙ মিস্ত্রী আব্দুল খলিল (৪০), তার স্ত্রী রুমা আক্তার (৩২), ৩ ছেলে হাফেজ আব্দুল্লাহ (১৩), মাদ্রাসা ছাত্র মোহাম্মদ (১০) ও ইসমাইল (৪)। আর পাশের বাসার ভাড়াটিয়া গার্মেন্টস কর্মী মো. শাহজাহান (২৫) ও তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার পারভিন (২২)।
বিআরইউ