টাঙ্গাইলের বাসাইলে ২০০৩ সালের পর সদর ইউনিয়ন পরিষদে আর কোন স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। চেয়ারম্যান, মেম্বার পদে ভোট দানের সুযোগ পাননি কোন ভোটার।
আর তাই ভোটের প্রসঙ্গ উঠতেই টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার বাসাইল সদর ইউনিয়নের মিরিকপুর গ্রামের হারাধন সূত্রধর (৫৩) বলেন, কবে যে চেয়ারম্যান-মেম্বার পদে শেষ ভোট দিছি মনে নাই, অনেক বছর পর ভোটের তারিখ ঘোষণা করায় আমরা সবাই খুশি।
প্রায় ১৯ বছর পর বাসাইল সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় তাঁর মতো ইউনিয়নের সবাই খুশি। তারা ১৫ জুন সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত সারাদিন চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ভোট দিবেন।
৬ নং ওয়াডের আতিকুর ইসলাম (২৫) বলেন ভোটার হবার পর থেকে সংসদ ও উপজেলার চেয়ারম্যানের ভোট দেওয়ার সুযোগ হলেও ইউপি নির্বাচনে ভোট দিতে পারি নাই, এই বার প্রথম ভোট দিতে পারবো বলে আনন্দ উপভোগ করছি।
বাসাইল সদর ইউনিয়নের কয়েকজন বাসিন্দা ও স্থানীয় সরকার শাখা সূত্রে জানা যায়, বাসাইল ইউপির শেষ নির্বাচনটি হয়েছিল ২০০৩ সালে, এরপর ২০১১ সালের স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের আদেশে বাসাইল ইউনিয়নের ৭, ৮, ৯ ওয়ার্ড রেখে পৌরসভার ঘোষণা করা হয়। পরে সীমানা নিয়ে জটিলতা ও ভোটার সংখ্যা কম থাকায় নানান জটিলতা দেখা দেয়।
এতে বাসাইল পৌরসভা নির্বাচন হলেও বাসাইল ইউনিয়ন পুর্নগঠিত না হওয়ায় নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ জটিলতার লড়াই শেষে ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসক বাসাইল ইউনিয়ন ভেঙে বাসাইল সদর ইউনিয়ন পুর্নগঠিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
৬ হাজার ৬শত ৬৩ জন ভোটার নিয়ে ৯টি ওয়ার্ড গঠন করা হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে বাসাইল সদর ইউনিয়নে সরকারী কমিশনার (ভূমি) বাসাইল কে প্রধান করে ৪ সদস্যের প্রশাসক নিয়োগ করে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়। এরপর থেকেই বাসাইল সদর ইউনিয়নবাসী অপেক্ষা করছিলেন নির্বাচনের। বর্তমানে ভোটার সংখ্যা ৬ হাজার ৯শত ৪৩ জন।
অবশেষে নির্বাচন কমিশন ২৫ এপ্রিল তাদের ওয়েবসাইটে দেশের বিভিন্ন ইউনিয়নের সঙ্গে বাসাইল সদর ইউনিয়নের নির্বাচনের তফসিলও ঘোষণা করে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৫ জুন এ ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৭ মে, প্রার্থিতা যাচাই-বাছাই ১৯ মে ও প্রত্যাহার ২৬ মে, এবং প্রতীক বরাদ্দ ২৭ মে।
উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাসাইল সদর ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী সোহানুর রহমান সোহেল (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফুল ইসলাম সোহেল (আনারস), বাছেদুল আলম সিদ্দিকী (চশমা), হারুন অর রশিদ (মটর সাইকেল) প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মনি শংকর রায় জানান, প্রতীক বরাদ্দের পর পর প্রত্যেক প্রার্থী তার নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রচার প্রচারণা ও গণ সংযোগ চালাতে পারবেন। যদি কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘিত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
আমারসংবাদ/এআই