সিরাজগঞ্জে খুব দ্রুত যমুনা নদীর পানি কমতে থাকায় জেলার বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে। জেলার দুইটি পয়েন্টেই যমুনায় পানি কমে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যাকবলিত এলাকার কিছু কিছু বসতবাড়ি থেকে নামতে শুরু করেছে পানি। এছাড়াও যমুনায় পানি কমায় অন্যান্য নদনদীর পানিও কমতে শুরু হয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় (২৫ জুন সকাল ৬ টা পর্যন্ত) সিরাজগঞ্জ হার্ডপয়েন্ট এলাকায় যমুনার পানি ৩৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫ সেমি ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে যমুনার পানি ৩২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৩ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একদিনের ব্যাবধানে যমুনায় পানি কমেছে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৩৫ সেমি ও কাজিপুর পয়েন্টে ৩২ সেমি।
শনিবার (২৫ জুন) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন ও সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক হাসানুর রহমান।
শনিবার (২৫ জুন) সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, গত ২৪ ঘন্টায় শহরের হার্ডপয়েন্ট এলাকায় যমুনা নদীর পানি ৩৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ৩২ সেন্টিমিটার কমে বিদৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনার পানি খুব দ্রুত কমছে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে অনেক নিম্নাঞ্চল থেকেও পানি নেমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এদিকে, চলতি বন্যায় জেলার পাঁচটি উপজেলার ৩৮টি ইউনিয়নের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এছাড়াও এরই মধ্যে ৯১০৬ হেক্টর জমির রোপা আমন, পাট, তীল, মরিচ, বাদাম, বোনা আমন, শাক-সব্জি, বীজতলাসহ উঠতি ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়েছে। এতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। অন্যদিকে জেলার নদী তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চল এলাকার ৮৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠে ও শ্রেণীকক্ষে পানি উঠায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
একই সাথে চলতি বন্যায় জেলায় প্রায় ৫৬৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফলে বন্যার্তদের জন্য ১৮৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পানিবন্ধি মানুষদের চিকিৎসার জন্য ২৩টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। সর্বক্ষণিক কাজ করছে এসকল টিম।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান জানিয়েছেন, বন্যাকবলিতদের মাঝে ১৪০ মেট্রিক টন চাল, ৬ লাখ টাকা ও ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার স্ব-স্ব উপজেলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সেগুলো দ্রুত বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও মজুদ রয়েছে ৭৭১ মেট্রিক টন চাল ও ১৪ লাখ টাকা। সেই সাথে বিশেষ বরাদ্দের জন্য ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১ হাজার ব্যান্ডিল ডেউটিন বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
কেএস