ময়মনসিংহের নান্দাইলের আসাদুল হক (২৪) নামে এক কলেজ ছাত্র শনিবার (২৫ জুন) দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন। এ ঘটনায় রুবেল মিয়া (২৪) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ। আসাদুল হক নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের অরণ্যপাশা গ্রামের মনজু মিয়ার পুত্র। সে উপজেলার স্থানীয় একটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র।
শনিবার (১৮ জুন) বাড়ির সামনে মাছ ধরার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তাঁর চাচাতো ভাই সুজনের দায়ের কুপে মাথায় ও মুখে গুরুতর আহত হয়। পরে আসাদুলকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ দিন পর তার মৃত্যু হয। এ ঘটনায় আসাদুল হকের পিতা মঞ্জিল মিয়া ২৩ জুন বাদী হয়ে প্রতিপক্ষ নবী নেওয়াজের পুত্র সুজন মিয়া (৩০), রিপন মিয়া (২৬), রুবেল মিয়া (২৪), জুনাঈদ মিয়া (১৮), মৃত রহমত আলীর পুত্র নবী নেওয়াজ (৬০), নবী নেওয়াজের স্ত্রী সুলেমা খাতুন(৫৫) ও সালমা খাতুন (২২) এর নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪জনকে আসামী করে নান্দাইল মডেল থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করে। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসাদুল হক মারা যাওয়ায় উক্ত মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন বিকেলে বাড়ির সামনে জলাশয়ে মাছ ধরা নিয়ে আসাদুল হকের ছোট ভাই মাসুদের সাথে হাতাহাতি হয় নবী নেওয়াজের ছোট ছেলে জুনাঈদের সাথে। তা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডার সৃষ্ঠি হয়। এক পর্যায়ে নবী মিয়ার ছেলেরা লাঠিসোঁটা ও ঘরে থাকা দা নিয়ে হামলা চালায় আসাদুল হকের উপর। তখন নবী মিয়ার ছেলে সুজন তার হাতে থাকা দা দিয়ে আশরাফুলের মাথায় উপর্যুপরি কোপায় ও শাবল দিয়ে তার দাতগুলো ভেঙ্গে দেয়।
অপরদিকে ঘটনাস্থলে থাকা নবী মিয়ার ছেলে রুবেল (২৮) তার হাতের দা দিয়ে মাসুদকে কোপায়। আসাদুল হকের চাচা নবী নেওয়াজের ছলে সুজন (৩৫) ও উল্লেখিত বিবাদীরা মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে আসাদুল হক ও আসাদুলের ছোট ভাই মাসুদ মিয়া (১৮)’র উপর উপুর্যপরি হামলা চালায়। এতে আহত আসাদুল হক ও তার ছোট ভাই মাসুদ মিয়া গুরুতর আহত হলে প্রথমে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। কিন্তুু আসাদুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে সেখানে ২৫ জুন দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তার মৃত্যু ঘটে।
জানা গেছে,অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মাথা থেকে আসাদুল হকের খুলি আলাদা করে ব্যান্ডেজ করা হয়। আলাদা করা খুলি সংরক্ষণ করা হয় সাভারের একটি ল্যাবরেটরিতে। তার মাথায় ৪৪টার মত সেলাই দেওয়া হয়েছিল।
নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, এ ঘটনায় ২৩ জুন ৭ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। তার মধ্যে রুবেল মিয়া নামে এক আসামি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসাদুল হক মারা যাওয়ায় এখন ওই মামলাটিই হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হয়েছে। বাকী আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।