আইনশৃঙ্খলা সভায় স্বাস্থ্যসেবা ও বিদ্যুতের অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২২, ০৪:৩৪ পিএম
আইনশৃঙ্খলা সভায় স্বাস্থ্যসেবা ও বিদ্যুতের অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভ

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নানা অনিয়ম, সেবার নিম্নমান ও পল্লীবিদ্যুতের গ্রাহক হয়রানিসহ বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভ করা হয়েছে। তবে এ সময় উপজেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো বলে উল্লেখ করা হয়।

বুধবার (২৯ জুন) বেলা ১১টায় উপজেলার অডিটরিয়াম মাল্টিপারপাস হলরুমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাব্বির আহম্মেদ আকুঞ্জির সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর আলম, ওসি রাশেদুল হাসান, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা খাতুন, সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য এড. আব্দুল হান্নান রতন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান দিলীপ দত্ত, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তাহমিনা আক্তার শান্তা, পল্লীবিদ্যুতের মোহনগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) মো. আবুল কালাম, ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন চৌধুরী, প্রেসক্লাব সম্পাদক মাসুম আহম্মেদ প্রমূখ বক্তব্য দেন।

সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য এড. আব্দুল হান্নান রতন বলেন, পল্লীবিদ্যুতের সংযোগ নিতে গেলে ঘুষ দিতে হয়। অফিসের কর্মকর্তা যা বলেন বাস্তবে কাজের সাথে তার কোন মিল নেই। পাঁচশো টাকার লাইন লাগাতে গেলে জনগণকে গুনতে হয় ৫-৭ হাজার টাকা। অফিসের নিচতলা ক্রাইমের আড্ডা। নিচে দালাল থাকে তারা মানুষকে জিম্মি করে টাকা খায়। মিটারের রিডিং বাড়ি বাড়ি গিয়ে করার কথা থাকলেও এ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্তরা অফিসে বসে খাতায় মনগড়া রিডিং লিখেন। পরে জনগণ হয়রানির শিকার হন। এসব বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

প্রেসক্লাব সম্পাদক মাসুম আহম্মেদ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নানা অনিয়ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাসপাতালে রোগীর সাথে কি ধরণের ব্যবহার করা হয় সেটা আমি জানি। আমি নিজেও একজন ভুক্তভোগী। মুমূর্ষু রোগীকে না দেখেই রেফার করে দেন চিকিৎসক। রোগীকে মন দিয়ে দেখেন না। রোগীকে সহযোগীতা করেন না। জরুরি বিভাগে কোন মেডিকেল অফিসার পাওয়া যায় না। এ কারণে হাসপাতালে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার মতো ঘটনা ঘটে বারবার। কিছু দিনের মধ্যে তিনটি ঘটনা কয়দিনের ঘটেছে। এর কারণ খোঁজা দরকার। না হলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। এছাড়া বন্যার সময়ে বকেয়া বিলের কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মাইকিং করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

বিদ্যুৎ ও স্বাস্থ্য সেবার নানা সমস্যা তুলে ধরে এর সমাধানের দাবি জানান ইউপি চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন চৌধুরী।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও)  ডা. মাহমুদা খাতুন হাসপাতালের নানা অনিয়মের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে বলেন, এই হাসপাতালের মতো এত নোংরা পরিবেশ ও অনিয়ম আর কোথাও দেখিনি। চিকিৎসকদের দালালি থেকে শুরু করে এত অনিয়ম কোথাও দেখিনি। কিছুদিন হয় যোগ দিয়েছি। এই কয়দিনে পরিবেশ অনেকটা ঠিক করেছি। সামনের দিনে সব অনিয়ম দূর করা হবে। এ কাজে সকলের সহযোগীতা চান তিনি।

শেষে সভায় বিদ্যুৎ ও চিকিৎসাসেবার চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধানে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেন ইউএনও।

এ সময় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বজলুর রহমান আনছারী, কৃষি কর্মকর্তা মো. শাখাওয়াত হোসেন, সাংবাদিক এস এম সারোয়ার খোকন ও ইউপি চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদারসহ আইনশৃঙ্খলা কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

কেএস