কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদে আটটি লোহার দান সিন্দুক রয়েছে। প্রতি তিন মাস পর পর সিন্দুকগুলো খোলা হয়। সিন্দুকগুলো থেকে এবার রেকর্ড ১৬ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে।
কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) গোলাম মোস্তফার তত্ত্বাবধানে আজ শনিবার সকাল ৯ টার দিকে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। তিন মাস ২০ দিন পর খোলা হলো দানবাক্সগুলো।
প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এখন চলছে টাকা গণনার কাজ। গণনায় মাদ্রাসার ১১২ জন ছাত্র, ব্যাংকের ৫০ জন স্টাফ, মসজিদ কমিটির ৩৪ জন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ জন সদস্য অংশ নিয়েছেন।
মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া জানান, মসজিদের ৮টি দানবাক্স খুলে পাওয়া গেছে ১৬ বস্তা টাকা । এখন চলছে গণনা। গণনার শেষে জানা যাবে কী পরিমাণ টাকা, সোনা, রুপা ও বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া গেছে।
এর আগে সর্বশেষ গত ১২ মার্চ দানবাক্সগুলো খোলা হয়েছিল। তখন ৪ মাস ৬ দিনে এই দানবাক্সগুলোতে জমা পড়েছিল ১৫ বস্তা টাকা। সেটা গণনা শেষে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকা। এ ছাড়া জমা পড়েছিল বৈদেশিক মুদ্রা, সোনা ও রুপা।
টাকা ছাড়াও মসজিদে নিয়মিত হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা অসংখ্য মানুষ।
পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা জানান, পাগলা মসজিদ ও ইসলামি কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে দানের বাকি টাকা ব্যাংকে জমা রাখা হয়। এ থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনুদান দেওয়া হয়। অসহায় ও জটিল রোগে আক্রান্তদের সহায়তাও করা হয়।
তা ছাড়া শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকদেরও এই দানের টাকা থেকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি খলিলুর রহমান জানান, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এসে দান করেন এই মসজিদে। যারা দান করতে আসেন তারা বলে থাকেন, এখানে দান করার পরে নাকি তাদের আশা পূরণ হয়েছে। আর এ বিষয়টির কারণেই এখানে দান করে থাকেন তারা।
কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দার তীরে অবস্থিত পাগলা মসজিদ।
কেএস