সিরাজদীখানে ধান কাটার ভরসা ‍‍`কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন‍‍`

সিরাজদীখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৩, ২০২২, ০৫:৫৩ পিএম
সিরাজদীখানে ধান কাটার ভরসা ‍‍`কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন‍‍`

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে অত্যাধুনিক ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মেশিন কম্বাইন্ড হারভেস্টারে কৃষকদের মাঝে আশার আলো দেখাচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে ধান কাটা শুরু হলেও তীব্র গরম আর শ্রমিক সংকটে বিপাকে পড়েন এ উপজেলার কৃষকেরা। 

অতিরিক্ত মূল্য দিয়েও মিলছে না শ্রমিক। তার ওপর পাকা ধান শুয়ে পড়ছে জমিতে। অবশেষে হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে এ উপজেলার কৃষকেরা ধান কেটে ঘরে তুলছেন। এতে শ্রমিক সংকট মেটানোর পাশাপাশি ধান উৎপাদন খরচও কমে এসেছে।

সরেজমিনে উপজেলার বয়রাগাদী ইউনিয়নের গোবরদী গ্রামের ফসলি জমিতে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটা ও মাড়াই করার চিত্র দেখা গেছে।

জানা যায়, প্রতিবছর বোরো ধান কাটার মৌসুমে এ উপজেলায় শ্রমিকের চাহিদা বেড়ে যায়। চাহিদার পাশাপাশি বেড়ে যায় পারিশ্রমিকও। এতে বোরো ধান উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। এজন্য কৃষকের দুশ্চিন্তা লাঘবে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে আনা হয়েছে এ কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন। 

মেশিনটি অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে ধান কাটা ও মাড়াই করতে পারে। শুধু রোদে শুকিয়ে ধান ঘরে তুলতে হয়। এ মেশিন দিয়ে খুব সহজেই এখন ধান ঘরে তুলতে পারছেন কৃষকেরা। প্রতি ঘণ্টায় দুই থেকে তিন বিঘা জমির ধান কাটা যাচ্ছে। 

এতে ঘণ্টায় ৮ থেকে ১০ লিটার তেল খরচ হচ্ছে। দুই বিঘা জমির ধান কাটতে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা খরচ হয়। অথচ শ্রমিক দিয়ে ধান কাটালে ৬-৭জন শ্রমিক সারা দিনে এক বিঘা জমির ধান কাটতে পারেন। তাতে বিঘা প্রতি খরচ হয় ৩-৪ হাজার টাকা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ৫হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। এ উপজেলায় ৪টি কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন রয়েছে।

কৃষকরা বলেন, আগে কখনো মেশিনের মাধ্যমে ধান রোপন ও কাটা দেখিনি। এবার মেশিনের মাধ্যমে ধান রোপণ ও কাটা হচ্ছে। এ দেখে অনেক আনন্দ লাগছে। এতে আমাদের অনেক টাকা খরচ কম লাগবে।

উপজেলা কৃষি অফিসার রোজিনা আক্তার বলেন, মেশিনের সাহায্যে ধান কেটে ও মাড়াই করে শুধুমাত্র রোদে শুকিয়ে ঘরে তুলতে হয়। চালক অভিজ্ঞ হলে ঘণ্টায় এক একর জমির ধানও কাটা সম্ভব। কিন্তু এখনও অভিজ্ঞ চালক না থাকায় ঘণ্টায় দেড় থেকে দুই বিঘা জমির ধান কাটতে পারছেন। 

প্রতিবছরই বোরো ধান কাটার সময় শ্রমিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। এ কারণে সময় মতো ধান ঘরে তুলতে না পেরে বৃষ্টি ও অকাল বন্যাতে কৃষকের ধান নষ্ট হয়ে যায়। এখন কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন দিয়ে স্বল্প খরচে ধান ঘরে তোলা যাচ্ছে। 

আমারসংবাদ/এআই