নরসিংদী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ কার্যালয়ে ড্রাইভার পদে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন মো. জয়নাল আবেদিন। নিয়োগপত্র পাওয়ার পর যোগদান করতে গেলে বাধে বিপত্তি। অনিবার্য কারণ দেখিয়ে দুই দুই বার যোগদান পিছিয়ে দেন সেখানকার সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার। যোগদানের শর্তানুযায়ী পূর্বের চাকরি ছেড়ে দিতে হয়েছে। পল্লীবিদ্যুতের কর্মকর্তার তালবাহানায় নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে না পারায় বেকার হয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন জয়নাল আবেদিন।
জয়নাল আবেদিন নেত্রকোনা সমাজ সেবা কার্যালয়ে ড্রাইভার পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত. মোজাফফর হোসেনের ছেলে।
বিষয়টি গত মাসে (জুন-২০২২) বাংলাদেশ পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিতভাবে জানিয়েছেন জয়নাল আবেদিন। কিন্তু কোন সাড়া পাননি।
ভুক্তভোগী জয়নাল আবেদিনের সাথে কথা বলে ও নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে নরসিংদী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এ ড্রাইভার পদে আবেদন করেন জয়নাল আবেদিন। ২১ সালের ডিসেম্বরে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এর কেন্দ্রে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। দুই পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হওয়ার পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিনিয়র জেনারেল মানেজার মো. ইউসুফ আলী স্বাক্ষরিত ‘ড্রাইভার’ পদে অন-প্রবেশনে নিয়োগপত্র হাতে পান জয়নাল। নিয়োগপত্রের শর্তানুযায়ী পূর্বের কর্মস্থল (নেত্রকোনা জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়) থেকে ৪ এপ্রিলে অব্যাহতি নেন তিনি। পরে ৭ এপ্রিল নরসিংদী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-২ এ যোগদান করতে গেলে যোগদান পত্র গ্রহণ না করে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে ৮ মে যোগদান করতে বলা হয়। সিনিয়র জেনারেল মানেজার মো. ইউসুফ আলী স্বাক্ষরিত পত্রে যোগদানের সময়সীমা বর্ধিত করা হয়। পরে ওই বর্ধিত তারিখে যোগদান করতে গেলে আবারও যোগদানপত্র গ্রহণ না করে নানা তালবাহানা করলে নিরাশ হয়ে ফেরত আসেন জয়নাল আবেদিন।
ভুক্তভোগী জয়নাল আবেদিন জানান, এখন আমার দুই কুলই শেষ। পল্লীবিদ্যুত সমিতির কর্মকর্তার তালবাহানায় সেখানে যোগদান করতে পারলাম না। এদিকে তাদের শর্তানুযায়ী সমাজ সেবা কার্যালয়ের চাকরিটা ছাড়লাম। পরিবার নিয়ে এই কয়মাস ধরে খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি। ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এ অনিয়মের বিচার চাই।
নরসিংদী পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার মো. ইউসুফ আলী বলেন, ওই নিয়োগের শর্ত ছিল আমাদের কার্যালয়ে গাড়ি থাকতে হবে। নানা জটিলতায় নির্ধারিত সময়ে আমরা গাড়ি ক্রয় করতে পারিনি। ফলে তাকে যোগদান দিতে পারিনি। কারণ গাড়ি নাই তিনি যোগদান করে কি করবেন। তাই এই নিয়োগে যোগদানের সময় পেরিয়ে গেছে। এখন গত বুধবার (৫ জুলাই) আবারও পত্রিকায় নতুন নিয়োগের বিজ্ঞাপণ দেওয়া হয়েছে। চাইলে তিনি এতে আবেদন করতে পারেন। এতে তার বিষয়টি আমরা বিবেচনায় রাখবো।
এ বিষয়ে জানতে পল্লীবিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোহা. সেলিম উদ্দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ না করে তিনি কেটে দেন। এমনকি ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।
কেএস