চৌমুহনীতে ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার ,গ্রেপ্তার ৪

ইমাম উদ্দিন আজাদ, নোয়াখালী প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২২, ০৩:৩৮ পিএম
চৌমুহনীতে ছিনতাইকৃত টাকা উদ্ধার ,গ্রেপ্তার ৪

নোয়াখালীর বাণিজ‍্যিক শহর  চৌমুহনী থেকে ডাচ্‌-বাংলা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের এক কর্মীর কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ৩৩দিন পর পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযানে ৪ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ সময় ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে নগদ ৪ লাখ ৫৪ হাজার  ৫শত টাকা উদ্ধার ও ৩টি মোটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত ছিনতাইকারীরা হলো, উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর করিমপুর এলাকার এছাক মিয়ার বাড়ির মো.আবুল কাশেসের ছেলে যুবায়েদ হোসেন বিপ্লব (২৮) চৌমুহনী পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ডের পৌর হাজিপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে পারভেজ (৩০) ১১নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গাপুর গ্রামের মৃত অজি উল্যার ছেলে আমিরুল ইসলাম সুজন (২৮) গনিপুর এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মো.সাহাব উদ্দিন (৩৭)। জানা যায়, আসামি যুবায়েদ হোসেন বিপ্লবের নামে ৩টি ও এমাম হোসেনের নামে ২টি মামলা চলমান আছে।

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে  পুলিশ সুপার কার্যালয় হলরুমে আয়োজিত এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো.শহীদুল ইসলাম। এর আগে গতকাল বুধবার ৩ ছিনতাইকারীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় একাধিকস্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ। আটককৃতরা উক্ত ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িত ছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশের নিকট  স্বীকার করেছে। 

পুলিশ সুপার শহীদুল ইসলাম আরোও জানিয়েছেন, ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সহদোর দুই ভাই ইয়াছিন আরাফাত রহিম (৩২) ও মহিউদ্দিন সোহাগ (৩৮)। তারা উপজেলার গনিপুর এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। পুলিশের অভিযান টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়। তবে আটককৃতদের দেওয়া তথ‍্যে তাদের বসত ঘর থেকে ৪লাখ ১৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বাকী আসামিদের কাছ থেকে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়। 

জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা পুলিশকে জানায়, সুজন ২ লক্ষ টাকা,বিপ্লব ১ লক্ষ টাকা পারভেজ ১ লক্ষ টাকা ভাগ হিসেবে পায়। বাকি টাকা সোহাগ নিজের কাছে রেখে দেয়। ঘটনার দিন ঘটনাস্থলের আশেপাশে থেকে সোহাগ টাকা বহনকারী গতিবিধি সুজনকে জানায় এবং রহিম রাস্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পলায়নের সহায়তা করে। ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি  রহিমের। তা সুজনের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়। 

উল্লেখ্য, সুজন নিজেকে দুর্গাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে পরিচয় প্রদান করে। রমিহ পৌর ছাত্রলীগের কথিত নেতা হিসেবে সর্বত্র নিজেকে পরিচয় দেয়। অপর পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্ত।  

উল্লেখ্য, ২০ জুন দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আটিয়াবাড়ির পোল সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্রতিটি উপজেলায় ডাচবাংলা ব‍্যাংকিংয়ের একটি করে মাস্টার এজেন্ট পয়েন্ট থাকে। এ এজেন্ট পয়েন্ট থেকে অন্যান্য সাধারণ এজেন্ট পয়েন্টগুলোতে টাকা সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিনের মতো গত ২০ জুন সকালের দিকে চৌমুহনী ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাস্টার পয়েন্ট থেকে তাদের কর্মী মোজাম্মেল হক ওরফে জামসেদ ১৯ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। ওই টাকা তিনি বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা এজেন্টদের কাছে বিতরণের জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। মোজাম্মেল হক দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে করে আটিয়াবাড়ি পোল সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা তিন যুবক আরেকটি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে তার গতিরোধ করে। এ সময় তারা মোজাম্মেলের কাছ থেকে জোরপূর্বক ১৯ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।  

এ ঘটনায়  ২১ জুন চৌমুহনী ডাচ্ বাংলা ব্যাংকিংয়ের মাস্টার এজেন্ট মোহাম্মদ সাইফুল বাশার (৪৩) বাদীয় হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা তিনজনের নামে ১৯ লাখ টাকা ছিনাতাইয়ের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।  

কেএস