মিঠাপুকুর উপজেলা জুড়ে চলছে আবাদি জমি, খালবিল, নদী-নলায় ড্রেজার মেসিন দিয়ে বালু উত্তোলনের মহা-উৎসব। বিভিন্ন প্রভাবশালীর পরিচয় বহন করে বালু খেকোরা বালু উত্তোলন করছে নির্বিধায়।
এতে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ফসলি জমি, বাড়ীঘর, গ্রামীন অবকাঠামোসহ বালু পরিবহনের ফলে ব্যবহৃত ছোটবড় ব্রিজ কালভার্ট। স্থানীয় প্রশাসনকে অভিযোগ দিয়েও মিলছে না প্রতিকার।
সরেজমিন ঘুরে উপজেলার বিভিন্নস্থানে ড্রেজার মেসিন দিয়ে বালু উত্তোলন দেখতে পাওয়া যায়।
তারমধ্যে লতিবপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর মাদ্রাসা সংলগ্ন,০২ নং-রানীপুকুর ইউনিয়নের বলদিপুকুর ব্যাপটিষ্ট মিশন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ সিংগীর ডোবা, ০৩ নং-পায়রাবন্দ ইউনিয়নের দমদমার ঘাঘট নদী,ভাংনী ইউনিয়নের ঘাঘট নদীর মাঠেরহাট, হুলাশুগন্জ,বালারহাট, কাফ্রিখাল ইউনিয়নের নারায়নপুর, ১১ নং-বড়বালা ইউনিয়নের আটপুনিয়া যমুনেশ্বরী নদীর দুটি অংশসহ একাধিক স্পটে দিবারাত্রি বালু উত্তোলন করার চিত্র পাওয়া যায়।
এসব এলাকার জণগন অভিযোগ করে বলেন, বিভিন্ন প্রভাবশালী আর রাজনৈতিক ব্যক্তির ছত্রছায়ায় এসব বালু অবৈধভাবে ড্রেজার মেসিন দিয়ে উত্তোলন করছে সুবিধাবাদীরা। তাদের বাঁধা দিতে গেলে হুমকিধামকি, ভয়ভীতি এমনকি মারধর করা হচ্ছে।
গ্রামীন অবকাঠামো ছোট রাস্তাগুলো দিয়ে দশ চাকার ড্রাম ট্রাকে বালু পরিবহন করায় ছোটছোট ব্রিজ কালভার্টগুলো ফেটে চৌচির এবং সমস্ত এলাকা ধুলো বালিতে মেঘাচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে।
এরফলে সর্দিকাশি সহ নানাবিধ রোগে ভুগছে মানুষ। ছোটবাচ্ছারা স্কুল কলেজ যাওয়ার সময় ধূলোময়লায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে। ড্রেজার মেসিন সংলগ্ন কৃষি জমিগুলো ভেঙ্গে পড়ছে।
এদিকে বারবার উপজেলা প্রশাসনকে অভিযোগ করেও কোন সুফল পাচ্ছেনা ক্ষতিগ্রস্তরা। লিখিত অভিযোগ দিয়েও মিলছেনা কোন প্রতিকার।
ইসমাইল হোসেন, ইদ্রিস আলী, মন্টু মিয়া সহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুইজন ইউপি-সদস্য জানান, একাধিকবার ফোন করেও কোন সহযোগিতা পাইনি।
বিট-পুলিশ কর্মকর্তারা বিধিনিষেধ করলেও ড্রেজার মেসিন তারা নির্বিধায় চালিয়ে আসছে। বরং গোপনে লিখিত অভিযোগ করলেও বালু ব্যবসায়ীরা তা একটি নির্দিষ্ট সূত্রে আগাম তথ্য পেয়ে যায় এবং অভিযোগকারীর উপর চড়াও হয়।
তারা আক্ষেপ করে বলেন, পূর্বের সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান মৃধা দায়িত্বে থাকার সময় বালু উত্তোলন বন্ধ ছিলো। নিয়মিত অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতেন। তার বদলির পর থেকে মূল্যত বালু উত্তোলন আবার চালু হয়।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি মুঠোফোন আমার সংবাদকে জানান, যতবার আজ ফোন পেয়েছি তার বেশির ভাগই ছিলো বালু সংক্রান্ত। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করার কথা বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ-জোহরা জানান, এসিল্যান্ডকে বালু উত্তোলনের অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্হা নিতে বলা হয়েছে।