নীলফামারীতে বাণিজ্যিকভাবে তৈরি হচ্ছে জৈব সার

আল-আমিন, নীলফামারী প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২২, ০৩:২২ পিএম
নীলফামারীতে বাণিজ্যিকভাবে তৈরি হচ্ছে জৈব সার

তিস্তা নদীর চরাঞ্চলের তীরবর্তী ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের ছাতুনামা চর। অত্র গ্রামের আব্দুল গফুরের পুত্র হাচানুর রহমান সহ আরো অনেকে আনন্দ উচ্ছাস্বের সহিত বলেছেন প্যারাগন কোম্পানী কারখানাটি আসায় এলাকার শতাধিক মানুষের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। জৈব সার ব্যবহারের কারণে গত বছরের চেয়েও এবার খেতের ফলন ভালো হয়েছে। ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানীর ছাতুনামা চরে ৩ একর জমিতে  জৈব সারের কারখানা স্থাপন করা হয়। 

ধান, আলু, ভুট্টা, বাদাম, মরিচ ইত্যাদি বিভিন্ন ফসলে কৃষকেরা এ সার ব্যবহার করছেন। দূর-দূরান্তের কৃষকেরা প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন ডিলারের কাছ থেকে জৈব সার সংগ্রহ করে কৃষিকাজে ব্যবহার করছেন। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার প্রয়োগের ফলে জমিতে জৈব পদার্থ কমে যাচ্ছে। জমিতে পাঁচ ভাগ জৈব পদার্থ থাকার নিয়ম থাকলেও বর্তমানে আছে এক ভাগ। 

সরেজমিনে গিয়ে জৈব সারের কারখানাটি পরিদর্শন শেষে প্যারাগন এগ্রো লিমিটেড কোম্পানির অর্গানিক ফার্টিলাইজার অফিসার সাব্বির হোসাইন এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমরা ১০টি উপাদান দিয়ে জৈব সার তৈরি করছি সেগুলো হলো গোবর, পোল্ট্রি লিটার, কাঠের গুড়া, পেশমার্ড, তামাক গুড়া, ছাই, টাইকোর্ডোমা, মোলাসেস, সায়াডাস্ট, কোকোডাস্ট দিয়ে জৈব সার তৈরী করছি এবং পরীক্ষামূলক ভাবে বিগত ১ বছর যাবত বাজারজাত করে সুনাম অর্জন করছি জৈব সার ব্যবহার উপযোগী কিনা পরীক্ষায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নমুনা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেলে পুরোদমে সার বাজারজাত করা হবে। 

তিনি আরো বলেন, পরীক্ষামূলক ভাবে স্থানীয় কৃষকেরা আমাদের কোম্পানির জৈব সার নিয়ে প্রয়োগ করছেন ফসলি জমিতে। আশানুরুপ ফলাফলও পাচ্ছেন তারা এবং প্রতিদিন ১ থেকে দেড় টন করে জৈব সার উৎপাদন করে তিন সাইজের প্যাকেজ করা হচ্ছে- ৪০ কেজি, ৫ কেজি ও  ১ কেজি। এলাকার পরিবেশ রক্ষার্থে কারখানা ও আশপাশ এলাকায় নিয়মিত ভাবে ফিনাইল, স্যাভলন ও ব্লিচিং পাউডার স্প্রে করা হয়। এছাড়াও প্যারাগন এগ্রো লিমিটেড'র "প্যারাগন জৈব সার তৈরী পুরোদমে উৎপাদন শুরু হলে নতুন করে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে আমি মনেকরি।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলীর বলেন, প্যারাগন জৈব কারখানায় স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য পেতে মাটিতে জৈব সার দিয়ে ফসল ফলানোর কোনো বিকল্প নেই। তাই বর্তমানে জৈব সার দিয়ে ফসল ফলানোর প্রকৃক্রিয়া জনপ্রিয় হচ্ছে। মাটির গঠন ও গুণাগুণ ঠিক রাখতে হলে জৈব সার ব্যবহার করে মাটিকে উৎপাদনক্ষম করতে হবে। তাই জৈব সার তৈরি ও সংরক্ষণের ব্যাপারে কৃষকদের যত্নবান হওয়া প্রয়োজন। প্যারাগন কোম্পানীটি জৈব সার কারখানা সরকারী অনুমোদন পেলে কৃষিকাজে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে এবং কৃষকরা উপকৃত হবে। 

কেএস