১১ জনের মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ খন্দকিয়া গ্রাম

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: জুলাই ৩০, ২০২২, ১২:০৩ পিএম
১১ জনের মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ খন্দকিয়া গ্রাম

স্বপ্ন ছিল সন্তান উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হবে। হাল ধরবে পরিবারের। বাপ-মা বুনেছিলেন হাজারও স্বপ্ন। এক দুর্ঘটনায় ১১ শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে পরিবারের স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল।চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বড়তাকিয়া রেলস্টেশনের এক কিলোমিটার এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ১১ যাত্রী নিহত হয়েছেন। তাদের সবার বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের আমানবাজার পূর্ব পাশে খন্দকিয়া গ্রামে। একসঙ্গে ১১ জন কিশোর ও যুবকের মৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে গেছে পুরো গ্রাম।

নিহতরা হলেন- আর অ্যান্ড জে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক মোস্তফা মাসুদ রাকিব (২৮), জিয়াউল হক সজীব (২৮), রিদোয়ান চৌধুরী (৩১) ও ওয়াহিদুল আলম জিসান (৩২)। শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার্থী হিশাম (১৮), আয়াত (১৮), মারুফ (১৭), তাসফির (১৮) ও হাসান (১৯)। নিহত অন্যজন হলেন- মাইক্রোবাস চালক গোলাম মোস্তফা (৩৫), তিনি হাটহাজারী উপজেলার চিকনদণ্ডী এলাকার বাসিন্দা।

আহতরা হলেন- তাছমীর পাভেল (১৬), মো. মাহিম (১৮), মো. সৈকত (১৮), তানভীর হাসান হৃদয় (১৮), মো. ইমন (১৯) ও মাইক্রোবাসের চালকের সহকারী তৌকিদ ইবনে শাওন (২০)। তারা চমেক হাসপাতালের ২৪ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।

পরিবারের বড় সন্তানকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন হাসানের মা। মায়ের বুক ফাটা আর্তনাদ ছিল গগনবিদারী। কোনোভাবেই যেন মনকে সান্ত্বনা দিতে পারছিলেন না তিনি। অ্যাম্বুলেন্সের সামনে দাঁড়িয়ে নাতির জন্য নীরবে চোখের জল ফেলছিল দাদা।

শুধু হাসান নয়, নিহত সবার বাড়িতেই শোক। সেই সঙ্গে খন্দকিয়া গ্রামের সবার চোখেমুখে শোকের ছায়া। নিহতের স্বজনদের সান্ত্বনা দেয়ার কোনো ভাষাই যেন খুঁজে পাচ্ছেন না তারা।

ট্রেনের লাইনগুলো এখনো অরক্ষিত, গেটম্যান না থাকার কারণে বারবার ঘটছে প্রাণহানি। কোনভাবেই থামানো যাচ্ছে না মৃত্যুর মিছিল। রেলক্রসিং এ যাতে আর কোনো প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে সেই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে সজাগ হওয়ার আহ্বান খন্দকিয়াবাসীর।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দীন গণমাধ্যমকে জানান, পরিবারের লোকজনের আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

ইএফ