বাগাতিপাড়ায় চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২২, ০৫:৪৫ পিএম
বাগাতিপাড়ায় চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

লাল কালি দিয়ে চিরকুট লিখে গলায় উর্না পেচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে মাড়িয়া খাতুন (১৩) নামে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। রোববার (৩১ জুলাই) নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর ইউনিয়নের বিলপাড়া গ্রামে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।

মৃত স্কুলছাত্রী মাড়িয়া তার মা মর্জিনা ও দ্বিতীয় পিতা জহুলুর ইসলামের সঙ্গে বাগাতিপাড়ার বিলপাড়া গ্রামে ভাড়া বাসায় বসবাস করতো। সে উপজেলার মিশ্রিপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিলো।

জানা যায়, ঢাকার মোজাহরের সঙ্গে তার মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে লালমনিরহাটের জহুরুলের সঙ্গে মা মর্জিনা দ্বিতীয় বিবাহে আবদ্ধ হন।

পুলিশ ও মর্জিনা জানান, গতকাল রাতে মাড়িয়া তাকে বলে মা আমার মাথা খুব ব্যাথা করছে, মাথায় তেল দিয়ে দাও। পরে মর্জিনা মেয়ের মাথায় তেল বসিয়ে কিছু সময় মাথা টিপে দিলে মাড়িয়া ঘুমিয়ে পড়ে। 

তখন তিনি মাড়িয়াকে ঘরের দরজা লাগিয়ে ঘুমাতে বলে নিজের ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েন। সকালে উঠে মাড়িয়াকে অনেক ডাকা ডাকি করে তার সারা না পেয়ে পাশের বাড়ির এক যুবককে দিয়ে তার ঘরের উঁচু জানালা দিয়ে ডাকতে বললে সেই যুবক মাড়িয়াকে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। 

এ সময় তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে ফাঁস লাগান উর্না কেটে নিচে নামায় এবং পুলিশে খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিকেল চারটার দিকে মৃত মাড়িয়ার মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে বাগাতিপাড়া থানা পুলিশ। তাদের পারিবারিক ঝামেলা ছিলনা বলে স্থানীয়রা জানায়।

বাগতিপাড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম বলেন, মৃত মাড়িয়া খাতুনের স্কুল ব্যাগের ভেতর থেকে ১০টাকা দামের টিস্যুর পেকেট থেকে কলমের লাল কালি দিয়ে লেখা একটা চিরকুট পাওয়া গেছে। 
এতে লেখা আছে "আমার মৃত্যুর জন্য আমি দায়ি আমি চাইনা এর জন্য বাবা কোন বিপদে পরুক। কারন সে আমার জন্য অনেক করছে। নিজের বাবার থেকেও বেশি আদর করছে।" 

অফিসার ইনচার্জ আরও বলেন, তার ব্যবহৃত এনড্রয়েড মোবাইল ফোনটি তার শয়ন কক্ষে পাওয়া যায় যেটাতে দেখা যায় তার আত্মহত্যার সময় ২৫টি মিসড কল উঠে আছে কিন্তু মোবাইলটির লক খোলা যাচ্ছে না। 

প্রেমঘটিত কোন বিষয় এই আত্মহত্যার সাথে জড়িত থাকতে পাড়ে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে। 
ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে আর এর প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী আইনুনাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এই আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা রুজু করা হয়েছে বলে জানান সিরাজুল ইসলাম।


আমারসংবাদ/টিএইচ