ভরা বর্ষা মৌসুমে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে পানি না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে বোনা আমন ধান চাষিরা। বর্ষার মাস শ্রাবণেও যেন পানির জন্য কৃষকদের মাঝে হাহাকার চলছে। উপজেলা কৃষি অফিসের হিসাবে এখন বেশিরভাগ জমিতে চাষিরা বোনা আমন ধান চাষ করেছেন। ফলে আমন ধানের ফসল লক্ষ্যমাত্রার থেকে ফলন কম হওয়া এবং আলু আবাদের জমি উর্বর না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে চাষিরা দুশ্চিন্তায় পড়েছে।
সোমবার (১ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায় উপজেলার লতব্দী ইউনিয়নের কংসপুরা এলাকার ফসলের জমিগুলোতে বোনা আমন ধান চাষ হয়েছে। কিন্তু জমিগুলোতে পানি নেই। এতে ধানের চারা গুলো শুকিয়ে একাকার হয়ে গেছে। এছাড়া উপজেলার বয়রাগাদী, মালখানগর, ইছাপুরা, মধ্যপাড়া, জৈনসার, কোলা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নে একই চিত্র দেখা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় চলতি মৌসুমে রোপা আমন ৩৫০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে, আরো চাষ হবে। এছাড়া বোনা আমন ৫ হাজার ১০০ হেক্টর আবাদ হয়েছে। এবার যদি বোনা আমনের জমিতে পামি না বাড়ে তবে আমনের ফলন কম হবে। আর যদি পানি কম হয় রোপা আমনের ফসল ভালো হবে। বোনা আমন আবাম কম হলে আলু চাষিদের জমি ডাকতে সমস্য হবে।
কংসপুরা গ্রামের কৃষক আলী হোসেন বলেন, আমি কয়েক দিন আগে রোপা আমন ধানের চারা রোপণ করেছি। কিন্তু জমিগুলোতে পানি এসে চলে গেছে। এখন জমিগুলো শুকিয়ে গেছে। এরকম তীব্র গরম থাকলে এবং পানি যদি না আসে চারা গুলো আর বাঁচানো সম্ভব হবেনা। সবগুলো চারা মরে যাবে এবং অনেক টাকার ক্ষতি হবে। এবার এ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকাতেই পানি ওঠেনি। তাই আসছে মৌসুমে আলু রোপণ করতে আমাদের অনেক কষ্ট হয়ে যাবে। এর কারণ হচ্ছে আলুর জমি ডাকার জন্য নারা (খর) পাওয়া যাবে না। এর ফলে আলুর ফলন ভালো হবে না।
গোবরদী গ্রামের কৃষক মো. ইয়াসিন বলেন, এবার বয়রাগাদী ইউনিয়নে বেশির ভাগ জমিতে পানি আসেনি। এতে করে বোনা আমন ধান না হওয়ার শঙ্কা রয়েছে এবং বোনা আমন না হলে আলুর জমি ডাকতে পারবো না। এছাড়া পানি না আসলে জমি উর্বর হবে না,আলুর ফলন কম হবে। এতে আলু আবাদে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এতে করে খুব চিন্তা হচ্ছে। আল্লাহ যেন আমাদের জমিগুলোতে মোটামুটি করে পানি দেয়, তবে ফসল ফলাতে সমস্যা হবে না।
কয়েকজন কৃষক বলেন,আমন ধান হলো যত পানি বেশি হবে ফসলও বেশি হবে। যত পানি কম হবে ফসল কম হবে। এছাড়া এই জমিগুলোতে পানি যদি বেশি দিন থাকে, তবে আলু চাষের জন্য অনেক ভালো হবে এবং উর্বর থাকবে। সে ক্ষেত্রে আলুর ফলনেও অনেক ভালো হয়। তাই এই বর্ষার পানি গুলো আমাদের কৃষি জমি গুলোর জন্য অনেক উপকারী। আর এবার যদি পানি না হয় আমন ধান এবং আলুর জন্য ক্ষতি। আল্লাহই ভালো জানেন আমাদের কপালে কি আছে।
উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন বলেন, এই বর্ষা মৌসুমে অনেক জমিতে পানি আছে, আবার অনেক জমিতে নেই। এর কারণ হচ্ছে অনেক কৃষি জমি ভরাট হওয়ায় জমিগুলোতে পানি আসা যাওয়া করতে পারে না। এতে করে কৃষিতে সমস্যা হচ্ছে। তাই সবাইকে বলবো কৃষি জমি যেন কেউ ভরাট না করে।
কেএস