অবৈধভাবে ব্যাটারি ফ্যাক্টরির বিষাক্ত বর্জ্যে হুমকির মুখে পড়েছে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুরে হাতিমারা ও গোবিন্দবাড়ী এলাকা। ভয়াবহ ধ্বংসের মুখে পড়েছে পরিবেশ। বিষাক্ত বর্জ্যের ধোঁয়া ছড়াচ্ছে চংরুইডা নামের একটি ব্যাটারি ফ্যাক্টরি।
কারখানা থেকে নির্গত এসিড মিশ্রিত তরল বর্জ্য, সিসা যুক্ত ছাই ও ধোঁয়া দুর্বিষহ করে তুলেছে অত্র এলাকার হাজার হাজার মানুষের জীবন। এমনকি জীববৈচিত্রের ওপর ও পড়ছে ক্ষতিকর ও বিরূপ প্রভাব।
এলাকাবাসী জানায়, বিষাক্ত বর্জ্যের কারণে কারখানার আশপাশের জমিতে ফসল হয়না। এমনকি গাছে ফল ধরে না এবং পুকুরে মাছ ও বাঁচতে পারেনা। উড়ন্ত ছাই ও ধোঁয়ার কারণে অত্র এলাকার প্রায় বাড়িতেই চোখের অসুখ, হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ লেগেই থাকে। এছাড়াও আশে-পাশে থাকা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিকরা বলেন, তারা ঠিক মতো শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারেন না যখন ব্যাটারি ফ্যাক্টরির কালো ধোঁয়া বের হয়।
নারী, শিশু ও গার্মেন্টস শিল্প কারখানা শ্রমিকরা এসব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। দূষণের কবল থেকে রেহাই পেতে এলাকাবাসী কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে এলাকাবাসীর কথা কর্ণপাত করেনি ফ্যাক্টরই কর্তৃপক্ষ।
এদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছেন, সামান্য পরিবেশ দূষণ হলেও হতে পারে। বর্জ্য পরিশোধনের ফ্যাক্টরিতে নেই কোন ইটিপি প্ল্যান্ট। এছাড়াও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রসহ সব ধরণের কাগজপত্র রয়েছে বলে দাবি করেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জমির মালিক দুলাল জানান, ব্যাটারি ফ্যাক্টরির কাছে জমি ভাড়া দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, এখানে শুধু সীসা গলিয়ে ব্যাটারি তৈরি করা হয় এবং কারখানার কালো ধোঁয়া বের হয় বলে সত্যতা স্বীকার করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, কারখানাটিতে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার জন্য ব্যাটারি তৈরি করে। শুরুতেই কারখানার তরল ও উড়ন্ত বর্জ্যে দূষিত হতে থাকে পরিবেশ।
এ ব্যাপারে ব্যাটারি ফ্যাক্টরির কর্মকর্তা বায়েজিদ প্রতিবেদককে জানান, আমরা সিসা গালিয়ে ব্যাটারি তৈরি করে থাকি। তার চেয়ে আমি আর বেশি কিছু আপনাকে বলতে পারবো না।
গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নয়ন ভূঁইয়া বলেন, আমরা এর আগেও ওই ফ্যাক্টরিকে ৬ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছি, তারপরও তারা অবৈধভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা তদন্ত করে এর সঠিক ব্যবস্থা নিব।
আমারসংবাদ/এসএম