কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া পৌর শহড়ের ময়লার ভাগাড়ের আশপাশে ডাবের খোসা, চিপসের মোড়ক, কলার খোসা, ব্যবহারিত মাস্ক, খাবারের উচ্ছিষ্ট, মেডিক্যালের বর্জ্য, রক্তমাখা গজ-তুলা, কোমল পানীর পরিত্যক্ত বোতলসহ এরকম বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। ডাস্টবিন ময়লায় পরিপূর্ণ হওয়ায় রাস্তার পাশে ফুটপাতে এভাবে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চারপাশে।
দায়িত্ববানদের অবহেলা ও পৌর কর্তৃপক্ষের চরম অব্যবস্থাপনার ফলে পরিবেশ দূষিত হবার পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন পৌরবাসী।
বুধবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সরেজমিনে পৌর শহরের ডিগ্রি কলেজ রোড, পাকুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির অফিসের সামনে, পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে, হোসেন পুর রোডের দুইটি ময়লার ভাগাড়সহ পৌর এলাকায় একাধিক স্থানে দেখা যায় এমনি চিত্র। ডাস্টবিনে ময়লা জমে উপচে পড়ছে। লোকজন ডাস্টবিন পরিষ্কার না পেয়ে ডাস্টবিনের পাশের রাস্তায় ময়লা ফেলছেন। বিভিন্ন জায়গায় সেসব ময়লা যত্রতত্র ছড়িয়ে পড়ছে। চারদিক উৎকট গন্ধে বাতাস ভারী হয়ে থাকছে। লোকজনকে নাক চেপে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে । বাতাসের দুর্গন্ধ নাগরিক জীবনকে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেললেও এর বিন্দু মাত্র টের পান না পৌরসভার কর্তা-ব্যক্তিরা।
পাকুন্দিয়া পৌরসদরের বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, রাস্তার পাশের ডাস্টবিন ও আশপাশের এসব ময়লা ডিঙ্গিয়ে বাজারে যেতে হয়। যা খুবি বিরক্তিকর একটি বিষয়। গত বছর মাঝে মধ্যে পরিষ্কার করা হলেও এখন দীর্ঘদিন যাবত ময়লা পরিষ্কার করা হয়না তাই ময়লার স্তূপ হয়ে আছে। আমাকে প্রতিদিন এ পথ দিয়ে নাক চেপে বাজারে যেতে হয়। গত এক সপ্তাহ ধরে ডাস্টবিনের এ ময়লাগুলো এভাবেই পড়ে আছে। পরিষ্কার করার কোন উদ্যোগ নেই পৌর কর্তৃপক্ষের।`
পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানান, হাসপাতালে তিনটি ডাস্টবিন আছে, দুইটা সপ্তাহে একদিন পরিষ্কার করা হলেও আরেকটি পরিষ্কার করা হয়না। তারা স্বীকার করেন এতে করে আশ-পাশে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
পাকুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বাবলু বলেন, পাকুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অফিসের সামনে ময়লার ভাগাড়ের দুর্গন্ধ অফিসে বসা যায় না। বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে কোন ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। আশা করছি নতুন কমিটি গঠনের পরে একটা সুরাহা হবে।
পরিবেশবিদরা বলেন,` দীর্ঘদিন ডাস্টবিনে ময়লা থাকার ফলে এখানে অনেক জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। যার কারণে একদিকে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে অন্যদিকে সাধারণ মানুষও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন।`
নিয়মিত ডাস্টবিনের বর্জ্য অপসারণ বিষয়ে পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শফিকুর রহমান বলেন,`আমাদের জনবল সংকটের কারণে বর্জ্য অপসারণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এই স্বল্প লোকবল দিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি শহরের বর্জ্য গুলো দ্রুত অপসারণ করবার। আপনি যেসব এলাকার কথা বললেন দ্রুতই এসব বর্জ্য অপসারণ করা হবে।
এবিষয়ে জানতে পৌর মেয়র মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম আকন্দকে অফিসে ও মোবাইলে একাধিক বার কল দিয়ে পাওয়া যায়নি।
আমারসংবাদ/এসএম