মীরসরাই ট্র্যাজেডি

হাটহাজারীতে এ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন আর স্বজনদের আহাজারি

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২২, ০১:২৫ পিএম
হাটহাজারীতে এ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন আর স্বজনদের আহাজারি

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে থামছে না কান্নার রোল, সাইরেন বাজিয়ে বাড়ির আঙ্গিণায় প্রবেশ করছে একের পর এক লাশবাহী গাড়ি। মৃত্যুর সংবাদ শুনে আহাজারি করতে করতে নিহতদের বাড়িতে আসতে থাকে স্বজনরা। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলে আসছে শোকের মাতম। বারবার জ্ঞান হারাচ্ছে নিহতের পরিবারের সদস্যরা। মীরসরাইয়ের আলোচিত ট্রেন-মাইক্রোবাস সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত মোঃ তাসমির হাসান পাবেল (১৭) মৃত্যুবরণ করেছে।

শনিবার (৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। টানা নয়দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। এর একদিন আগে শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে তার আরেক বন্ধু আয়াতুল ইসলাম আয়াত একই ঘটনায় আহত হয়ে আটদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

মীরসরাই ট্রাজেডিতে এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহত তাসমির হাসান উপজেলার চিকনদন্ডী ইউনিয়নের যুগিরহাট এলাকার আব্দুল আজিজ সাব রেজিস্টার বাড়ির মৃত মোহাম্মদ পারভেজের পুত্র। সে ওই এলাকার নজুমিয়া স্কুলের ছাত্র।

রোববার (৭ আগস্ট) সকাল ১০টায় ছমদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তার জানাজা নামায অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করেন।

এর আগে এ ঘটনায় নিহত হন, শিক্ষক- সজীব, জিসান, রিদুয়ান ও রাকিব। শিক্ষার্থী- মারুফ, হাসান, হিসাম, সাগার, সাজ্জাদ, আয়াত, আসিফ, শান্ত শীল ও গাড়ি চালক নিরো। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ইমন বাড়ি ফিরলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে শিক্ষার্থী সৈকত, হৃদয়, মাহিম ও গাড়ির হেলপার তৌকির।

এলাকাবাসীরা বলেন, মীরসরাই গেইটম্যানের অবহেলায় ট্রেন-মাইক্রোবাস সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় আমাদের এলাকার ১৩টি তরতাজা প্রাণ নিভে গেলো। নিহতরা সবাই এলাকার উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলো। এতে আমাদের এলাকার শিক্ষার আলো নিভে গেছে। তারা আর এন্ড জে কোচিং সেন্টারের মাধ্যমে এলাকাজুড়ে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে সবাইকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। 

উল্লেখ্য, গত ২৯শে জুলাই আর এন্ড জে নামক একটি কোচিং সেন্টার থেকে মীরসরাই খৈয়াছড়া ঝরনায় আনন্দ ভ্রমণ করতে যায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। ফেরার পথে ওই এলাকার রেলক্রসিংয়ে চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাস চালকসহ এগারোজনের মৃত্যু হয়।

কেএস