হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কর্মী নয়নের বিরুদ্ধে আব্দুল আজিজ (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে অস্ত্রোপচারের অভিযোগ উঠেছে। আব্দুল আজিজ জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর এলাকার মৃত ওসিম উদ্দিনের ছেলে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্র জানায়, কিছুদিন আগে আব্দুল আজিজের মলদ্বারের রাস্তায় একটা ফোঁড়া হয়। বাড়িতে তার আপনজন বলতে কেউ না থাকায় শনিবার (৬ আগস্ট) সকাল ৭ টায় তার বোন ফাতেমা চিকিৎসার জন্য সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতাল গেইট সংলগ্ন ওষুধ বিক্রেতা সওদা মেডিকেলের স্বত্বাধিকারী সুমন তার পরিচিত হওয়ায় বড় ডাক্তারের কথা বলে তাকে আফরা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়া আসেন এবং পরিচ্ছন্ন কর্মী নয়নের মাধ্যমে অপারেশন করান।
অপারেশনের পর থেকে আব্দুল আজিজের ক্ষতস্থানসহ আশেপাশের সকল স্থানে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব করলে তাকে আবারও সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুরে আফরা ডিজিটাল ডায়াগোস্টিক সেন্টারে আনা হয়। কিন্তু পরিচ্ছন্নতা কর্মী নয়ন ও সুমন তার চিকিৎসা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তাদের জামালপুর যেতে পরমর্শ প্রদান করলে রোগী ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বের হতে না চাইলে নয়ন ও সুমন তাদের একটি সরিষাবাড়ী হাসপাতালের জরুরী বিভাগ থেকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে রেফার এর একটি কাগজ নিয়ে এসে দেয়। সংবাদ পেয়ে সাংবাদিকরা আফরা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে মালিক হাবিব মিয়া সাংবাদিক মাসুদকে তথ্য সংগ্রহ করার কাজে বাধা গ্রস্থ করে।
প্রকাশ থাকে যে, গত ২ মাস পুর্বে জামালপুরের সরিষাবাড়ী হাসপাতালের ঝাড়ুদার হিসেবে কর্মরত ছিলেন নয়ন মিয়া। ঝাড়ুদার হয়ে অর্থ নিয়ে জয়েন্টে ইনজেকশন সহ নানা অপকর্মের জন্য তাকে সরিষাবাড়ী থেকে জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ এ বদলী করে দেয় জামালপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেখানে তিনি না থেকে অধিকাংশ সময় সরিষাবাড়ীর বিভিন্ন ক্লিনিকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে।
রোগী আঃ আজিজ জানান, নয়ন ও সুমন দুইজনে মিলে তার অপারেশন করেছে। তারা জানতেন না যে নয়ন কোন ডাক্তার না। নয়ন আর সুমন বলে আপনারা জামালপুর চলে যান। আমার লোক আসার আগেই তারা তাড়াতাড়ি করে চলে গিয়েছে। ঝাড়ুধার হয়ে টাকা নিয়ে ডাক্তার না দেখাইয়া এ অবস্থা করল আমি এর বিচার চাই। আজিজের কিছু হলে কাউকে তার পরিবার ছাড়বেন না বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে রোগীর বোন ফাতেমা জানান, আমি দুজনকে জিগাইছিলাম ডাক্তার কেডা। সে সময় নয়ন বলল আমিই ডাক্তার। চার হাজার টাকার বিনিময়ে সুমন ও ঝাড়ুদার নয়ন তার ভাইয়ের অপারেশন করেন। দীর্ঘদিন ধরেই তার ভাইয়ের ডায়াবেটিস ছিলো। অপারেশনের পর ভাইয়ের অবস্থা অবনতি হতে থাকে। তাই তাকে সোমবার দুপুরে আফরা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নয়নকে দেখাতে আনেন। কিন্তু নয়ন তার চিকিৎসা করাতে অপারগতা প্রকাশ করে জামালপুরে নিয়ে যেতে বলেন।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী হাসপাতালের ডাঃ ছালেহা এ প্রতিবেদক মাসুদুর রহমানকে জানান, রোগীকে আমি দেখিনি। হাসপাতালে আসলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় রোগীকে রাশেদুল আমাকে জানিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
কেএস