জোয়ারের পানিতে কলাপাড়ায় ২৫ গ্রাম প্লাবিত

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১০, ২০২২, ০৮:২১ পিএম
জোয়ারের পানিতে কলাপাড়ায় ২৫ গ্রাম প্লাবিত

নিম্নচাপে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। সাগরের বড় বড় ঢেউ তীরে এসে আছড়ে পড়েছে।

বুধবার সকাল থেকে সারাদিন থেমে থেমে কখনো ভারি। আবার কখনো হালকা ও মাঝারি ধরনের দমকা হাওয়ার সাথে বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া দুই দফা নদ নদীর পানির স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট বৃদ্ধি পেয়ে তলিয়ে গেছে বেড়িবাঁধের বাইরের নিচু এলাকা। এরফলে ভাঙ্গন কবলিত বেড়িবাঁধ থেকে রামনাবাদ নদীর পানি প্রবেশ করে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া, চম্মাপুর, ধানখালী ইউনিয়নের প্রায় ২৫টি গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের ১৫টি, চম্মাপুরের ৫ টি ও ধানখালী ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম সম্পূর্ণ পানি নিচে তলিয়ে গেছে। এখানের অনেকের মাছের ঘের, পুকুর ও ফসলি জমিসহ বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কোথাও কোথাও গাছ-পালা দুমড়ে মুচরে পড়ে রয়েছে।

এখানের স্থানীয় মানুষগুলো চরম বিপাকে রয়েছে। টিউবয়েল তলিয়ে যাওয়ায় খাবার পানির ব্যাপক সংকট দেখা দিয়েছে। ঘরের চুলা তলিয়ে যাওয়ায় রান্নার অভাবে শুকনো খাবারের উপর নির্ভর করছে অনেকে। অনেকই না খেয়ে থাকতে দেখা গেছে। চাড়িপাড়া গ্রামের শেফালী বেগম বলেন, অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে আমাদের ঘড় বাড়িসহ সবকিছু পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘরের চুলা পানিতে তলিয়ে থাকায় দুপুরের খাবার খেতে পারিনি। হাঁস-মুরগীগুলো কোথায় গিয়েছে তারও কোন খোঁজ পাচ্ছি না। অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পরেছে বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা।

একই ইউনিয়নের বানাতিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সুরাইয়া নাছরিন শিল্পী জানান, জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গিয়েছে। পানিতে বাচ্চারা তলিয়ে যেতে পারে এ ভয়ে অভিভাবকরা তার সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে পারছে না। ধানখালী ইউনিয়নের রাইসুল ইসলাম রাজিব গাজী বলেন, ধানখালীর নিশানবাড়িয়ার বেড়িবাধ ভেঙ্গে মানুষের ঘড়-বাড়ি, ফসলি ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এতে মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছে।

এদিকে সগরে উত্তাল ঢেউয়ে তাণ্ডবে ১৫ জেলেসহ এফবি নিশাত মাছধরা ট্রলার ডুবে গেছে। এতে ওই ট্রলারের ৯ জেলে নিখোঁজ রয়েছে। মঙ্গলবার ১১ টার দিকে ট্রলারটি তীরে আসার পথে পয়রা বন্দরের শেষ বয়ার এলাকায় গভীরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ জেলেরা হলো ফরহাদ, সোহেল, ইয়াসিন, ইয়াকুব, আলকাছ, আমজাদ, শরীফ উদ্দিন, শরীফ ও জাফর। তাদের সবার বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়া এলাকায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুয়াকাটা আলীপুর মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি মো. আনসার উদ্দিন মোল্লা।

ওড়িষ্যা উপকূল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি একই এলাকায় অবস্থান করছে। পায়রাসহ সব বন্দর সমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। একই সাথে সকল মাছধরা ট্রলার সমূহকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আমারসংবাদ/এসএম