নীলফামারীতে প্রতিবন্ধীর জমি দখলের পায়তারা

আল-আমিন, নীলফামারী প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২২, ০৪:৪৩ পিএম
নীলফামারীতে প্রতিবন্ধীর জমি দখলের পায়তারা

নীলফামারীতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অবৈধভাবে প্রতিবন্ধির জমি দখলের পায়তারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগীরা। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ীতে।

এ ঘটনার অভিযুক্তরা হলেন ওই এলাকার ও গয়াবাড়ীর রাসেল সরকার (৪০), জাদু মিয়া(৩৫), নুরু কাজী (৩৫), কাজী লিটন (৩৫), কাজী জুয়েল (৩৭), কাজী তুহিন (২৩) ও সফিয়ার রহমান (৩০)। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ডিমলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী দায়ের করে  ভুক্তভোগী কাজী মানিক হোসেন (২৬)।

জানা যায়, অভিযুক্তরা ও ভুক্তভোগীরা সম্পর্কে আত্মীয় এবং পাশাপাশি বাড়ী। গয়াবাড়ী মৌজার জেএল নং-২৫ খতিয়ান নং-১৬৯৪, ১৯৫৪, ২৩৮৮, দাগ নং-এসএ ৪০০২,৪০০৪, ৪০০৬, ৩৭০৯, বিএস ৭০১০, ৪৪৬৫,৭০০৯ এর মোট ১.৪২ একর জমি পৈত্রিক  সূত্রে পেয়ে দীর্ঘদিন থেকে ভোগ-দখল করে আসছে ভুক্তভোগীরা ও তার পরিবার। সম্প্রতি অভিযুক্তরা অন্যায়ভাবে উক্ত জমি দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। যার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী কাজী মানিক হোসেন বাদী হয়ে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ১৪৪/১৪৫ ধারা অনুযায়ী বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করে। পিটিশন নং-২০৮/২০২২ তারিখ:০৭/০৭/২০২২। মামলার প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ আদালতের নিদের্শ মতে গত ৭ জুলাই বিকেলে ডিমলা থানা কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌঃ কাঃ বিঃ আইনের ধারা মোতাবেক নোটিশ জারি করে। নোটিশ পেয়ে অভিযুক্তরা আরও বেশী উত্তেজিত হয়ে গত ৯জুলাই সকালে জমি দখলের উদ্দেশ্যে হাল-চাষের প্রস্তুতি গ্রহণ করলে ভুক্তভোগী কাজী মানিক হোসেন ও তার মা মোছাঃ কদবানু বেগম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হালচাষের প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং আদালতের আদেশ তারা মানে না বলে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও ভুক্তভোগীদের একপর্যায়ে মারার জন্য উদ্যত হয়।

ভুক্তভোগী কাজী মানিক হোসেন বলেন, আমি দীর্ঘ ৩২ বছর থেকে আমার পৈত্রিক সূত্র পাওয়া জমি ভোগ দখল করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ আমার জ্ঞাতিগুষ্টির লোকেরা অন্যায়ভাবে আমাদের উপর জুলুম করে জমি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। এজন্য আমি আইনের আশ্রয় নিতে আদালতে একটি মামলা দিলে তারা (অভিযুক্তরা) আদালতের আদেশ মানতে নারাজ। তাদের এমন অত্যাচারে আমি এবং আমার পরিবার অতিষ্ট হয়ে পড়েছি আমরা এর থেকে মুক্তি চাই।

আদালতের আদেশ অমান্য ও অবৈধভাবে জমি দখলের সত্যতা পেয়েছে ডিমলা থানা পুলিশ নিজেও। এ সংক্রান্ত আদালতে একটি প্রতিবেদনও জমা দিয়েছে ডিমলা থানার এএসআই জিয়াউল হাসান। 
এ বিষয়ে জিয়াউল হাসানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিজ্ঞ আদালতের আদেশ অনুযায়ী ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জের নির্দেশে আমি উভয় পক্ষকে গত ৮ জুলাই শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য নোটিশ প্রদান করি এবং বিবাদীদের আগামী ১৪ আগস্ট বিজ্ঞ আদালতে হাজির হয়ে কারন দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করি। কিন্তু তারা (বিবাদীরা) আদালতের ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৪৪/১৪৫ ধারার আদেশ ভঙ্গ করে গত ৯জুলাই সকালে উক্ত জমি দখলের উদ্দেশ্যে হাল-চাষের প্রস্তুতিতে নিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে ও বাদীদের অকথ্যভাষায় গালাগালি করে এবং মারার জন্য উদ্যত হওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়।

তবে এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমি অবৈধভাবে দখলের চেষ্টা চালানোর ঘটনায় বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে ওই এলাকায় এবং অতি দ্রুত প্রশাসনের কাছে এর একটি সুষ্ঠু সমাধানের দাবি জানান এলাকাবাসী।

কেএস