ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের সিল জাল করে ভারতে প্রবেশের অপরাধে দুই যুবককে আটক করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ।
আটককৃতরা হলো- যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার বেগমপুর গ্রামের ধোনাই মোল্লার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩৫) এবং একই জেলার মনিরামপুর উপজেলার খোজালিপুর গ্রামের জমসেদ আলী দফাদারের ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩০)।
শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় তাদেরকে আটক করা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের সিল জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার দেখিয়ে আটককৃতদেরকে আখাউড়া থানায় সোপর্দ করেন।
আখাউড়া ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, আটক দুই যুবক বিকালে ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের শূন্যরেখায় দুই দেশের ফ্লাগ ডাউন শেষ হওয়ার পর চেকপোস্টের বহির্গমনের গেট পার হয়ে আগরতলা স্থলবন্দরে প্রবেশ করে। আগরতলা ইমিগ্রেশন পুলিশ পাসপোর্টের সিল দেখে সন্দেহ হওয়ায় তাদের আখাউড়া চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে ফেরত পাঠায়। এ সময় তাদের পাসপোর্টে দেওয়া আখাউড়া ইমিগ্রেশনের সিলটি জাল থাকায় ইমিগ্রেশন পুলিশ জাহাঙ্গীর আলম ও শরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে।
সূত্রে আরও জানায়, ওই দুই যুবক চলতি বছরের ২৬ জুলাই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে ইন্দোনেশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করেন।
এ সময় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ সন্দেহভাজন ভ্রমণকারী হিসেবে তাদের পাসপোর্ট অফলোড সিল দিয়ে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। পরে তারা কৌশলে ভারতের ভিসা নিয়ে আখাউড়ার দালাল চক্রের মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করে।
পরে আখাউড়া চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ স্বপন চন্দ্র দাস জানান, গ্রেফতারকৃত দুই যুবক আখাউড়া ইমিগ্রেশনের সিল জাল করে ভারতে প্রবেশ করে। পাসপোর্টের সিল দেখে আগরতলা ইমিগ্রেশন পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় তাদেরকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। পরে যাচাই বাছাই করে সিলটি জাল বলে নিশ্চিত হই। রাতেই তাদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট জালিয়াতি আইনে মামলা দিয়ে আখাউড়া থানায় হস্তান্তর করেছি।
আটক যুবক শরীফুল ইসলাম বলেন, পূর্ব থেকে মোবাইলের মাধ্যমে এক ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ হয়। তিনি আমাদেরকে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে চেকপোষ্ট নিয়ে যায়। এসময় তার সাথে আরও একজন লোক ছিল। তারা আমাদের কাছ থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা, ২০০ ডলার এবং পাসপোর্ট নিয়ে যায়। পরে আমাদেরকে সন্ধ্যার সময় ইমিগ্রেশন পার করে দেয়। ওই ব্যক্তিরাই পাসপোর্টে সিল দেয়। আমাদের সাথে একজন লোক ভারতে যায়। পরে আগরতলা ইমিগ্রেশন পুলিশ সিল সন্দেহ হলে আমাদেরকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়।
আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, একটি প্রতারক চক্রের মাধ্যমে দুই যুবক তাদের পাসপোর্টে আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের সিল নকল করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অগোচরে ভারতের আগরতলা ইমিগ্রেশন চলে যায়। আগরতলা ইমিগ্রেশন পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় তারা ওই যুবককে বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। পরে আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদেরকে আটক করে পাসপোর্ট জালিয়াতিসহ জাল জালিয়াতি ধারায় মামলা রুজু করে থানায় সোপর্দ করেছে। যে প্রতারক চক্র তাদেরকে এখানে এনেছে পুলিশ তাদেরকে সনাক্ত করার জন্য অনুসন্ধান করছে। তাদেরকে ধরার জন্য সর্বাত্মক অভিযান পরিচালনা করছি।
কেএস