কবর থেকে লাশ তুলে বাঁচানোর চেষ্টা!

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২২, ০৪:৪০ পিএম
কবর থেকে লাশ তুলে বাঁচানোর চেষ্টা!

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় সাপে কেটে মারা যাওয়া ইসাহাক আলী (৬০) নামের এক বৃদ্ধের লাশ কবর থেকে তুলে জীবিত করার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছেন গ্রাম্য কবিরাজ।

সোমবার (২২ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের বেলগাছি গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃত ইসাহাক আলী বেলগাছি গ্রামের মৃত জহর আলীর ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, কৃষক ইসাহাক আলী রোববার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় ফসলি জমিতে পানি সেচ দিচ্ছিলেন। এ সময় এক বিষধর সাপ তার পায়ে কামড় দেয়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে ধুনট উপজেলার  জালশুকা এলাকার গ্রাম্য কবিরাজ ও সাপুড়ে ফজলার হোসেনের কাছে নিয়ে যান। সেখানে ওই কবিরাজ ঝাড় ফুঁক দিয়ে তার পায়ে থাকা বাঁধন খুলে দেন। সেইসঙ্গে বলেন বিষ নেমে গেছে। তাই রোগীর সঙ্গে আসা সব লোকজনকে বাড়িতে চলে যেতে বলেন। তবে রোগীকে এক ঘণ্টা পর ছাড়া হবে বলেন জানান তিনি। কিন্তু পায়ের বাঁধন খুলে দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই ইছাহাক আলী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর আরও তিন ঘণ্টা ধরে কবিরাজ ইসাহাক আলীকে ঝাড় ফুঁক দেন। একপর্যায় রোগীর অবস্থার অবনতি হলে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে সটকে পড়েন। পরবর্তীতে ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ইসাহাক আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে পরদিন সোমবার (২২ আগস্ট) সকালে নিহতের স্বজনরা লাশ দাফনের জন্য প্রস্তুতি নেন। সে মোতাবেক সকাল আটটার দিকে তার জানাজা সম্পন্ন করে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন। এরইমধ্যে আরও দুইজন কবিরাজ ও সাপুড়ে সেখানে উপস্থিত হন। এমনকি সাপে কাটা মৃত রোগী তিনদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকেন। তাই দাফন করা ব্যক্তিকে কবর থেকে উত্তোলনের অনুমতি প্রার্থনা করেন।

নিহতের শ্যালক সম্রাট মিয়া বলেন, কবিরাজদের কথা শোনে কবর থেকে তার দুলাভাইয়ের লাশ উত্তোলন করা হয়। এরপর তাকে বাঁচানোর জন্য ঝাড় ফুঁক দেওয়া শুরু করেন। এমনকি সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কবিরাজ ঝাড়ফুঁক দিয়ে ব্যর্থ চেষ্টা করেন। একপর্যায় গ্রামের লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে কবিরাজ পালিয়ে যান। পরে ইসাহাক আলীর দাফন সম্পন্ন করেন পরিবারের লোকজন।

শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জিন্নাহ বলেন, ইসাহাক আলীর জানাজা ও দাফনে উপস্থিত ছিলাম। পরে শুনে কবিরাজ নাকি মৃত ব্যক্তিকে কবর থেকে উত্তোলন করে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তার ব্যর্থ চেষ্টার কারণে নিহতের স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে কবিরাজ পালিয়ে গেছে। পরবর্তীতে তার দাফন দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আমারসংবাদ/এসএম