ফরিদপুরে ধর্ষণের শিকার এক কিশোরী (১৩) অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার স্থানীয় থানায় মামলা দায়ের করেছে।
ওই কিশোরী স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। এ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সুজনসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে সুজনসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকালে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা। পুলিশ প্রধান আসামি শেখ সুজনসহ (২৩) পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে।
পরিবার ও পুলিশ সুত্রে জানাযায়, কিশোরী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। প্রধান অভিযুক্ত সুজন নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের বাসিন্দা ও পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীর গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করে সুজনের পরিবারের লোকজন। এক পর্যায়ে সালিশ ডেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ বিয়ের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় কয়েকজন মাতুব্বর। ঘটনা জানাজানি হয়ে যাওয়ায় জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতায় কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার অপর চার জন হলেন-আলিম উদ্দীনের ডাঙ্গী গ্রামের ফজল শেখ (৫৫), ইমারত মেম্বারের ডাঙ্গী গ্রামের ফরহাদ পত্তনদার (৫০), তুইজুদ্দি মাতবরের ডাঙ্গী গ্রামের কামাল বেপারি (৫০) ও আলিম উদ্দীনের ডাঙ্গী গ্রামের শেখ শামু (৫৮)।
পুলিশ ও এলাকাবাসী আরও জানায়, সুজনের পরিবার অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীর পরিবারকে তিন লাখ টাকা দিয়ে গর্ভপাত ঘটানোর চেষ্টা করে। গত ২১ আগস্ট একটি ভুয়া কাবিননামার মাধ্যমে লোক দেখানো সালিশের আয়োজন করা হয়।
সেখানে বিয়ে পরবর্তী ডিভোর্সের ব্যবস্থা রাখা হয়। এ খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত কয়েকজনকে থানায় নেয়। একইসঙ্গে কিশোরীকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে সুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ব্যাপারে নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাকুজ্জামান বলেন, স্থানীয়ভাবে প্রথমে ঘটনার মিমাংসার চেষ্টা করেন কয়েকজন মাতুব্বর। সালিশ ডাকার পর এক পর্যায়ে ধর্ষণের ঘটনাটি জানতে পারি। পরে স্থানীয় মাতুব্বরদের সালিশ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়। সেইসঙ্গে কিশোরীর পরিবারকে আইনের আশ্রয় নিতে বলি।
এর সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এম এ জলিল বলেন, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়েছে। অভিযুক্ত সুজন ও ঘটনাটি যারা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টাকারি চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার পাঁচ জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
এআই