সময় মতো স্বস্তির বৃষ্টিতে খুশি আমন চাষিরা

শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২২, ০৯:৫১ পিএম
সময় মতো স্বস্তির বৃষ্টিতে খুশি আমন চাষিরা

‘অতো পানি দেখলাম কয়দিন আগে। এখন পানি নাই। অতো পানি গেলো কোয়াই। ভাদ্রমাসে যদি জমিন ফুকাইযায়, আমরা গরিব অখল যাইমু কারকাছে?’ মনে রাজ্যের চিন্তা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কথাগুলো বলছিলেন আমন চাষই রাছুম আহমদ। পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের দত্তবন্দে সব সময়ই আমন ধানের চাষ করেন তিনি। সন্ধ্যা শেষ হয়ে রাত পোহাবার আগেই শুরু হয় মূষুলধারে বৃষ্টি! পর দিন শেষে রাতে আবার বৃষ্টি! এভাবে ধারাবাহিকভাবে বৃষ্টি হচ্ছে শান্তিগঞ্জ উপজেলায়। এতে বেজায় খুশি উপজেলার আমন চাষিরা। অগ্রহণ মাসে কাটা হবে এ ধান। এ বছর ধানে ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা। কারণ হিসেবে বলছেন, বন্যার কারণে হাওরগুলোতে প্রচুর পরিমাণে পলি পড়েছে। তাই কৃষকদের এমন প্রত্যাশা।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, এবছর শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৪৫ হেক্টোর জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে আমন ধান। শিমুলবাক ইউনিয়নে উপজেলার সবচেয়ে বেশি আমনের চাষ হয়। পাথারিয়া, জয়কলস, পশ্চিম পাগলা ও পূর্ব পাগলায় আমনের চাষ তুলনামূলক বেশি হয়। তবে, দরগাপাশা, পশ্চিম বীরগাঁও এবং পূর্ব বীরগাঁও ইউনিয়নে আমনের চেয়ে বোরোধানের আবাদ হয় বেশি। ধারণা করা হচ্ছে এ বছর আমন চাষে লক্ষামাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন করা যাবে। বন্যা হওয়ার কারণে সব জমিতেই পলি পড়েছে প্রচুর পরিমাণে। এ কারণে জমির উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। সারের ব্যবহার কম করলেই হবে।

উপজেলার একাধিক আমন চাষিদের কথা বলে জানা যায়, রোপণের জন্য ধানের চারা (স্থানীয় ভাষায় জালা) পাওয়া গেছে সহজে। জমিতে কাদা তৈরি হতেও কোনো সমস্যা হয়নি। পানির জন্য খুবই চিন্তিত ছিলেন তাঁরা। জাতীয় সমস্যার কারণে বিদ্যুতও ঠিক মতো পাওয়া যাচ্ছিলো না পানি তুলার জন্য। ইদানীং নিয়মিত বৃষ্টি হওয়ায় খুশি উপজেলার সব কৃষকরা। বন্যা হওয়ায় সব জমিতেই পলি পড়েছে। ভালো ফলন হওয়ার প্রত্যাশা কৃষকদের।

কৃষক সুরুজ আলী বলেন, আল্লায় দিলে এবছর বোরো ধানের মতো ফসল ফলবো আমার আমন জমিতে। সারও কম লাগবো। তবে, কামলা রোজ (শ্রমিকের মজুরি) একটু বেশি। সব পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমিকরাও পারিশ্রমিক বেশি চায়।

শান্তিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাজেদুর রহমান বলেন, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় এ বছর ২ হাজার ৪৫ হেক্টোর জমি আমন চাষ হবে বলে আমরা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। তবে আমার বিশ্বাস লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হবে। জমিতে প্রচুর পরিমাণে পলি পড়েছে। শুধু ধান রোপণ করে রাখলেই এবছর ধান ফলবে। সার দিতে হবে না।