নীলফামারীতে ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা তৈরীর কারিগরেরা

আল-আমিন, নীলফামারী প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২, ১১:৩৬ এএম
নীলফামারীতে ব্যস্ত সময় পার করছে প্রতিমা তৈরীর কারিগরেরা

আকাশে সাদা মেঘের ভেলা আর পথে প্রান্তরে ফুটে থাকা কাশফুল দেখে বুঝা যায় এখন শরৎকাল, আর শরৎকাল মানেই সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব।

শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে নীলফামারীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরীর কারিগরেরা । প্রতিটি পূজা মন্ডপেই এখন ধুম পড়েছে প্রতিমা তৈরীর । কে কার থেকে কত ভালো কত আকর্ষণীয় প্রতিমা তৈরি করে মানুষের হৃদয় ছুঁতে পারে তারই প্রতিযোগিতার মহা উৎসব যেন লেগেছে পুজা মন্ডপে মন্ডপে।

পূজা মন্ডপ কমিটিগুলোর নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী স্থানীয় ও অন্য জেলা থেকে প্রতিমা তৈরীর কারিগর নিয়ে এসে প্রতিমা তৈরি করছে। এ বছর জেলায় প্রায় ৮০০ টির মত  মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে ।

দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে প্রতিমা তৈরীর ধুম পড়লেও মূল্য নিয়ে হতাশার মধ্যে রয়েছে কারিগরেরা । নীলফামারী মিলন পল্লী সার্বজনীন দূর্গা মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ করছেন, নিখিল চন্দ্র পাল তিনি ফরিদপুর জেলা থেকে এসেছেন প্রতিমা তৈরীর জন্য ।

প্রতিমা তৈরীর কারিগর নিখিল চন্দ্র পাল জানান, এ বছর আটটি পূজা মন্ডপে দুর্গা প্রতিমা তৈরি করছি, বংশীয়ভাবে এই কাজ করে আসছি আমার দাদা তার দাদা এবং আমারা সকলে এই পেশার সাথে যুক্ত।

এবছর এই প্রতিমা তৈরিতে খরচ ৮০ হাজার টাকা নিলেও আমাদের প্রয়োজনীয় কাঠ, বাঁশ, রং, কাপড়,চুমকি, শোলা সহ বিভিন্ন উপকরণ এর দাম বেড়ে যাওয়ায এখন কাস্টমার এবং পেশাটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য এ কাজ করে যেতে হচ্ছে।

বিগত দুই বছর করোনা মহামারীর কারণে অল্প দামে প্রতিমা নির্মাণ করেছিল পূজা মন্ডপ গুল।এ বছর আশায় বুক বেঁধেছিলাম কিন্তু বৈশ্বিক যুদ্ধের কারণে সকল পণ্যের দাম বেড়ে গেছে তাই খরচ বেরে লাভের অংশ শুধুই কমেনি অনেক কমে গেছে। মন্ডপ কমিটিও এ বাজেট সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ।

একটি চালার মধ্যে প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে। দেবী দুর্গার সঙ্গে রয়েছে কার্তিক, গণেশ, লক্ষী ও স্বরসতী। এখন পর্যন্ত মুখমণ্ডলসহ দেহের অবয়ব গঠন করা হয়েছে। প্রতিমাগুলো শুকানোর কাজ চলছে। আর কিছুদিনই পরেই রং তুলির আঁচড়ে প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে প্রতিমাগুলো।

নীলফামারী কেন্দ্রীয় শিব মন্দিরের পুরোহিত সত্যেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলী জানান ১ অক্টোবর  ষষ্ঠী পূজার মাধ্যমে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে । এবছর দেবী মা দুর্গা গজে অর্থাৎ হাতিতে আগমন করবে যার অর্থ শস্যপূর্ণ বসুন্ধরা আর মা দুর্গা বিজয় দশমীতে গমন করবে নৌকায় চেপে এর অর্থ শস্যবৃদ্ধি আশানুরূপ হলেও বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে কিছু শস্য নষ্ট হবে ।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি বাদল চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক দীপকচন্দ্র চক্রবর্তী জানান, দুর্গা পূজার বিষয়ে উপজেলা গুলোকে ডেকে আমরা এরই মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছি ডিজে পার্টি নামে অশ্লীলতার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া নিরাপত্তার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি পাশাপাশি প্রশাসন সর্বাত্মক সজাগ রয়েছে এবং তাদের দৃষ্টি রয়েছে আমাদের মন্ডপ গুলির উপর কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা কেউ যেন ঘটাতে না পারে আমরা সতর্কতার সহিত বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি।

এআই