তিন কিলোমিটার সড়কে দুর্ভোগের অন্ত নেই

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২, ০১:০০ পিএম
তিন কিলোমিটার সড়কে দুর্ভোগের অন্ত নেই

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ মুশুল্লী চৌরাস্তা টু কালিগঞ্জ বাজার রাস্তা বছরের পর বছর সংস্কার করার পরেও যেন দুর্ভোগের অন্ত নেই। চার কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তার অধিকাংশ জায়গায় বড় বড় খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাটি ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত থাকায় এর গুরুত্ব বেড়ে গেছে বহুগুন।

এছাড়া রাস্তাটির সাথে ঐতিহ্যবাহী কালিগঞ্জ বাজারের একটি প্রাচীন সম্পৃক্ততা বিদ্যমান। কালিগঞ্জ বাজার এলাকায় সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মূলত উক্ত বাজারটির জন্যই রাস্তাটি এত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে ছোট-বড় হাজারো যানবাহন বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। রাজগাতী ও মুশুল্লী ইউনিয়ন সহ পার্শ্ববর্তী অন্যান্য ইউনিয়নের গ্রামবাসীরা উপজেলা সদর সহ বিভিন্ন স্থানে চলাচল করার একমাত্র অবলম্বন এ রাস্তা।

রাস্তাটি মুশুল্লী ও রাজগাতী ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত। রাস্তাটি এলজিইডি কর্তৃক তিন ধাপে পাকাকরন হলেও উক্ত রাস্তা দিয়ে মালবাহী বিভিন্ন ধরনের ভারী যানবাহন যাতায়াত যেন নিত্য দিনের সঙ্গি। রাস্তাটি গ্রামীণ রাস্তা হওয়ায় এর ধারন ক্ষমতা কম। গত প্রায় ৩ বছর পূর্বে রাস্তাটি পাকাকরণ করা হয়েছিল। ভারী যানবাহন রাস্তা দিয়ে চলাচল করায় রাস্তার বিভিন্ন জায়গা ধেবে গিয়ে গর্ত ও ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া বর্ষা মৌসুমে রাস্তার উপর পানি জমে পিচ উঠে গিয়ে ছোট-বড় খানা-খন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে উক্ত রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী বিভিন্ন যানবাহন চালক ও যাত্রী সাধারন চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী সহ প্রসূতি নারী ও অসুস্থ রোগীদের দূর্ভোগের শেষ নেই। প্রায়ই গাড়ী উল্টে গিয়ে ছোট-বড় দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, চার কি.মি রাস্তার প্রায় তিন কিলোমিটার জুড়েই ভাঙ্গন। রাস্তায় ছোট-বড় খানা খন্দে ইটের সুড়কী তথা কংক্রিট ফেলে রাখা হয়েছে। যা বৃষ্টিতে ভেজেঁ ও যানবাহনের চাকায় পিষে রাস্তার সাথে মিশে যাচ্ছে। এতে আরো বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। কার্পেটিং রাস্তার যেন কোন চিহ্নই নেই।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কিছু দিন পর পর রাস্তার ভাঙ্গন এলাকায় ইটের সুড়কী ও বালু দিয়ে গর্তগুলো ভরাট করে দেওয়া হয়। কিন্তুু পাকা রাস্তায় নিম্নমানের ইটের সুড়কী ফেলে কি আর ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব। এভাবেই চলছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। আর ভোগান্তি সারা বছর জুড়েই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন যানবাহন চালক বলেন, যেহেতু রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এ রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহনও চলাচল করে থাকে, সেজন্য রাস্তাটি নতুন করে শক্ত ও মজবুত ভিত্তিতে পুনরায় নির্মাণ করা প্রয়োজন। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তাটি পুন:নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোরালো আহব্বান জানিয়েছেন যাত্রীসাধারণ সহ যানবাহন চালকরা।

রাজগাতী ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইফতেকার মমতাজ খোকন বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পরে প্রথমে, এইতো কিছুদিন পূর্বে রাস্তায় দুই/তিন ট্রলি ইটের আধলা ফেলে গর্তগুলো ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করে দিয়েছি। রাস্তাটি প্রস্ততকরন প্রয়োজন। আমি সংশ্লিষ্ট উপজেলা কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেছি। তা নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রক্রিয়া চলছে।

এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা মো. শাহাবুর রহমান সজীব বলেন, গ্রামীণ রাস্তায় ভারী যানবাহন চলাচল তা রাস্তার জন্য উপযুক্ত নয়। এগুলো দেখে রাখার দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, জনগণকেও সচেতন হতে হবে। আর যেহেতু রাস্তাটি সময়ের সাথে সাথে এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে, রাস্তাটি প্রসস্তকরণ সহ নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রক্রিয়াকরণ চলছে।

এআই