আশুলিয়ায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে এক ১৫ বছর বয়সী কিশোরীকে ডেকে নিয়ে একটি কক্ষে আটকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে চার কিশোরের বিরুদ্ধে। এসময় ভুক্তভোগীর সাথে থাকা আরেক শিশুকেও অপর কক্ষে আটকে নির্যাতন ও ধর্ষণেরচেষ্টা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত পাঁচজনকে আটক করেছে।
রোববার (২ অক্টোবর) দুপুরে পাঁচজনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু মন্ডল।
এর আগে শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাতে পূর্ব ডেন্ডাবর এলাকায় অভিযুক্ত মো. আশরাফুলের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। পরে শনিবার (০২ অক্টোবর) গভীর রাতে আশুলিয়ার পূর্ব ডেন্ডাবর এলাকা থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়।
তবে ঘটনার মূল অভিযুক্ত মো. ইমনকে আটকের কথা পুলিশ জানালেও বাকীদের পরিচয় নিশ্চিত করেনি।
ভুক্তভোগী ১৫ বছর বয়সী কিশোরী বলেন, আমার বোন এখানে ভাড়া বাসায় থেকে একটি গার্মেন্টেসে চাকরি করে। আমাদের দেশের বাড়ি কিশোরগঞ্জ জেলায়। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আমি আশুলিয়ার ডেন্ডাবর এলাকায় বোনের বাসায় বেড়াতে আসি। ওই দিন রাতে বাসার পাশে একটি দোকানে মোবাইলে টাকা তুলতে গেলে কৌশলে ইমন নামে এক ছেলে আমার নম্বর জেনে নেয়। পরদিন শনিবার রাতে সে আমাকে ফোন করে ফুসলিয়ে বাসার সামনে ডেকে নেয়।
এর আগেও বোনের বাসায় এসে তার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো। পরে ইমন পাশেই তার বন্ধু আশরাফুলের বাড়িতে আমাকে কৌশলে নিয়ে যায়। এসময় আমার পাশের বাসার একটা শিশু মেয়ে সাথে ছিলো।
তিনি আরও বলেন, কক্ষে ঢোকার সাথে সাথেই ওই ইমনসহ তিনজন ভেতর থেকে দরজা আটকে দেয়। এসময় তারা আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। একই সময় আমার সঙ্গী শিশুটিকে অপর কক্ষে আটকে রাখে আরেকজন। পরে আমাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কক্ষের দরজা বাইরে থেকে তালা দিয়ে চলে যায় তারা। পরে তাদের চিৎকারে বাসার এক ভাড়াটিয়া তালা ভেঙ্গে তাদের উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী ১১ বছর বয়সী অপর শিশুটির বাবা বলেন, আমি বাসাবাড়ির ময়লা ফেলার কাজ করি। অনেক রাত পর্যন্ত আমারে বাইরে থাকতে হয়। আমার মাইয়াডা বাসার পাশেই একটা মাদ্রাসায় পড়ে। ওর দাদীর বাসায় থাকে ওই। গতকাইল ঘটনা কোন কিছু শুনি নাই। আজ এলাকার লোকজন আমারে ডাইকা ঘটনা বলে। পরে মাইয়া আমারে বলছে, ওরে ঘরে আটকাইয়া মারধর করছে, পায়জামা খুলছে এটুকুই।
ভুক্তভোগী শিশুটির প্রতিবেশী গার্মেন্টস শ্রমিক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বাচ্চাটা আমার বাসার গেটের সামনে অন্য বাচ্চাদের সাথে আজ বিকেলে খেলা করছিলো। তখন দেখি সে হাত ধরে কানতেছে। জিজ্ঞেস করার পর তাকে একজন ঘরে আটকে মারধর করেছে বলে জানায়। তার সাথে থাকা আরেকটা মেয়েকেও আটকে রেখে নির্যাতনের কথা জানায় শিশুটি। পরে রাতে ৯৯৯ কল করে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়। রাতেই পুলিশ বাড়ির মালিক আশরাফুল ও ইমনসহ পাঁচ জনকে আটক করে নিয়ে যায়।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রাজু মন্ডল বলেন, ভুক্তভোগী কিশোরী তাকে একাধিকবার জোরপূর্বক ধর্ষণের কথা আমাদের বলেছে। তবে শিশুটি রাতে তাকে মারধরের কথা বললেও আজ অন্যরকম বলছে। ভুক্তভোগীদের থানায় আনা হয়েছে। তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানোরে প্রস্তুতি চলছে।
আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে রাতেই পাঁচ জনকে থানায় নিয়ে এসেছি। তবে এদেরমধ্যে একটা ছেলের কথা সবাই নিরীহ বলতেছে। এ ঘটনায় মামলার কার্যক্রম চলছে।
এআই