বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্টে সম্প্রীতির মিলন মেলা বসেছিল বুধবার। যে জনারণ্যের কোলাহলে উলুধ্বনি, শঙ্খ ও ঢোলের সুরে মুখরিত ছিল সৈকতের পড়ন্ত বিকেল। পশ্চিম আকাশে সূর্যের লাল আবহে পানিতে ভাসিয়ে বিদায় জানানো হল শারদীয় দূর্গাকে।
সনাতন ধর্মের শারদীয় দূর্গা উৎসবের শেষ দিন প্রতিমা বিসর্জন ঘীরে সম্প্রীতির সবচেয়ে বড় সমাবেশ হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। দুই লক্ষাধিক মানুষের সমাগমে আনন্দের পাশাপাশি ভক্তদের বিষাদের ছাপে শেষ হয় প্রতিমা বিসর্জন।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবনী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে বিজয়া সম্মেলন শুরু হয় বিকাল সাড়ে ৩ টা থেকে। সৈকতের বালিয়াড়িতে বিদায় অঞ্জলি প্রদান চলে ৫ টার পরও। এর আগে বিকেল ৩টা থেকে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলা এবং পাশ্ববর্তী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে একে একে প্রতিমা বোঝাই ট্রাক আসতে থাকে।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি উজ্জ্বল কর জানান, কক্সবাজারে এবার প্রতিমা পূজা ছিল ১৪৮ টি। যার মধ্যে ১১০ টি মন্ডপে প্রতিমা সৈকতের লাবনী পয়েন্টে আনা হয়েছিল। এর পাশাপাশি পাশ্ববর্তী উপজেলা থেকে আনা হয় আরো অনন্ত ৪০ টি প্রতিমা। ফলে দেড় শতাধিক প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠানটি দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠান। শান্তি পূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ায় তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বেন্টু দাশ জানান, সৈকতের প্রতিমা বিসর্জন ঘীরে আগত পর্যটক সহ ২ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছে। যেখানে সকল ধর্মের মানুষের উপস্থিতি নতুন করে সম্প্রীতির বন্ধন ঘোষণা করেছে।
প্রতিমা বিসর্জন ঘীরে আয়োজিত বিজয়া সম্মেলনে প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বাংলাদেশ একটি সম্প্রীতির রাষ্ট্র এটা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারও প্রমাণিত হয়েছে। এই উন্নয়নশীল বাংলাদেশে একটা সময় সম্প্রদায়িকতার যারা বীজ বুনে অপতৎপরতা চালিয়েছিল তারা চিহ্নিত হয়েছে। এদের বয়কট করে জাতি এখন ঐক্যবদ্ধ। আগামি নির্বাচনে শেখ হাসিনার বিজয় নিশ্চিত করে এই ঐক্যের প্রমাণ দেয়ার আহবান জানান তিনি।
বিজয়া সম্মেলনে স্থানীয় সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলন শেষে একে একে দেয়া হয় প্রতিমা বিসর্জন। বিসর্জন ঘীরে সৈকত ও আশে-পাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা জোরদার ছিল।
কেএস