নির্বাচন বন্ধের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ, সিইসির শাস্তি দাবি

মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২২, ০১:৪৯ পিএম
নির্বাচন বন্ধের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ, সিইসির শাস্তি দাবি

গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনের উপ-নির্বাচন বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে ও সিইসির শাস্তির দাবি জানিয়ে ফুলছড়িতে আজও বিক্ষোভ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। একই সাথে করা হয়েছে রাস্তা অবরোধ।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বেলা ১২ টার দিকে উপজেলা আ.লীগের নেতৃত্বে উপজেলা শহরের কালির বাজারে এই বিক্ষোভ মিছিল ও উপজেলা হেড কোয়াটারের রাস্তা অবরোধ করে রাখা হয়। বিক্ষোভ মিছিলে উপজেলা আ.লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরাসহ নৌকা মার্কার হাজারো সমর্থকরা অংশ গ্রহণ করেন।

এসময় নেতা কর্মীরা নির্বচন কমিশনের এমন হঠকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিক্ষোভ মিছিলে বক্তারা বলেন, এখানে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কোনো কর্মকর্তারা ভোটের কোনো অনিয়মের খবর না জানলেও ঢাকা থেকে নির্বাচন কমিশন ইচ্ছাকৃতভাবে ভোট বন্ধ ঘোষণা করেছেন।

এসময় বক্তারা প্রশ্ন রেখে বলেন, কাকে খুশি করতে কমিশন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছ তা খতিয়ে দেখতে হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে অতি দ্রুত জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানানো হয়। বিক্ষোভ থেকে ইসির শাস্তির দাবিও জানান বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কমর্সূচি শেষে উপজেলায় সংবাদ সম্মেলন করারও কথা রয়েছে।

এরআগে গতকাল বুধবার (১২ অক্টোবর) বেলা সাড়ে বারোটার দিকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র দখল, অন্য প্রার্থীর এজেন্টদের ভোটের কক্ষ থেকে বের করে দেওয়াসহ ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকার অভিযোগে সাঘাটা উপজেলার বগারভিটা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে জাতীয়পার্টিসহ নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বী চার প্রার্থীই ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তাদের ভোট বর্জনের ঘোষণার বিষয়টি স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদের ফেসবুক আইডি "নিশাদ ভাইয়ের সমর্থক গোষ্টি" থেকেও লাইভে প্রচার করা হয়।

এসব ঘটনায় একইদিন বুধবার (১২ অক্টোবর) জালিয়াতির মাধ্যমে গোপন কক্ষে একজনের পরির্বতে আরেকজন ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে প্রথমে সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয় ও রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও  ফুলছড়ি উপজেলার ফুলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়সহ তিনটি ভোট কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়। এরপর কয়েক দফায় মোট ৫১ টি কেন্দ্রের ভোট একই অভিযোগে স্থগিত করেন নির্বাচন কমিশন। পরে বেলা আড়াইটার দিকে কেন্দ্র দখলসহ নানা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বন্ধ ঘোষনা করেন নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

পরে কমিশনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে ওই দিন বিকেল পাঁচটার দিকে সাঘাটা উপজেলা আ.লীগের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন ওই আসনের নৌকা সমর্থিত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন। এসময় তার সাথে জেলা ও উপজেলার আ.লীগ ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্য়ায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এরআগে নির্বাচন কমিশনের ভোট বন্ধের সিদ্ধান্তের পরপরই ফুলছড়ি-সাঘাটার আ.লীগের নেতাকর্মীরা এর প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগানে বিক্ষোভ মিছিল করেন।

উল্লেখ্য, এই আসনের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার গত ২২জুলাই মৃত্যুর পর ২৪ জুলাই আসনটি শুন্য ঘোষনা করে সংসদ সচিবালয়। নিয়ম অনুযায়ী কোনো আসন শুন্য ঘোষণা করা হলে ৯০ দিনের মধ্যে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী ১২ অক্টোবর বুধবার এই আসনের ১৪৫টি কেন্দ্রে সকাল ৮টায় ইভিএমে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছিল। শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণসহ ভোটের মাঠে সহিংসতা এড়াতে ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল সবগুলো ভোট কেন্দ্রই। নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছিলেন আ.লীগ মনোনীত মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টির এ এইচ এম গোলাম শহীদ রনজু (লাঙল), বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম (কুলা), স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (ট্রাক)।

কেএস