সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার নরিনা দাখিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী মোছাঃ শাকিলা খাতুনকে (১৪) অপহরণের একমাস হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। শাকিলা আসলে কোথায় এবং কিভাবে আছে, বেঁচে আছে নাকি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে সেই শংকাতে আতঙ্কিত পরিবার।
এদিকে গত ২২ সেপ্টেম্বর শাকিলা নিখোঁজ হওয়ার পর শাকিলার বাবা শাহিন শেখ প্রথমে শাহজাদপুর থানায় একটি অভিযোগ দেন। পরবর্তীতে শাকিলার অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর শাহিন শেখ গত ১ সেপ্টেম্বর মোট ৬ জনের নাম উল্লেখ করে শাহজাদপুর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহজাদপুর থানার এসআই রবিউল ইসলাম গত সপ্তাহে অভিযান চালিয়ে পার্শ্ববর্তী উল্লাপাড়া উপজেলার মৈশাকোলা থেকে আলহাজ্ব এবং জুলহক নামের দুজনকে আটক করলেও মামলার প্রধান আসামী ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে। অপরদিকে মাদ্রাসা ছাত্রী শাকিলাকে এখন পর্যন্ত উদ্ধার করতে না পারায় পরিবারে চলছে আহাজারি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শাকিলার খালার বাড়িতে থেকে স্থানীয় একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশুনা করতো মামলার প্রধান আসামি উল্লাপাড়া উপজেলার মৈশাকোলা গ্রামের রমজান আলীর পুত্র রেদোয়ান। শাকিলার খালার বাড়ি থেকে হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ার সুবাদে শাকিলাকে দেখে এবং পছন্দ করে। মাঝে মাঝে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে শাকিলাকে উত্ত্যক্ত করতো এই রেদোয়ান। পরবর্তীতে রেদোয়ানের পরিবার থেকে শাকিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু শাকিলার বয়স একেবারেই কম হওয়ায় শাহিন শেখ মেয়ের বিয়ে দিবেনা বলে জানিয়ে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে শাকিলাকে অপহরণ করে নিয়ে পালিয়ে যায় রেদোয়ান।
বিষয়টি নিয়ে শাকিলার মা আমেনা খাতুন ও বাবা শাহিন শেখ শনিবার সাংবাদিকদের জানান, শাকিলা অপহরণ হওয়ার এক মাস পূর্ণ হলো আজ। এখন পর্যন্ত শাকিলার কোন খোজ পাইনি। মাঝে মাঝে রেদোয়ানের পরিবারের পক্ষ থেকে ফোন করে বলা হয়, ‘মামলা তুলে নিয়ে মেয়েকে যদি রেদোয়ানের সাথে বিয়ে দাও তবেই মেয়ে ফেরত পাবে।’ নিরুপায় শাহিন শেখ সেই প্রস্তাবে রাজী হয়ে কয়েকবার রেদোয়ানের বাড়িতে গেলেও দেখা পাননি শাকিলার।
এদিকে শাহজাদপুর থানার এসআই মোঃ রবিউল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইতোমধ্যেই আমরা দুইজন আসামিকে ধরেছি। এছাড়া পাবনা উল্লাপাড়াসহ সম্ভাব্য স্থানে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করছি। খুব দ্রুতই উদ্ধার হবে শাকিলা।
কেএস