বরিশালের বাবুগঞ্জের ৪নং চাঁদপাশা ইউনিয়নের পূর্ব বকসিরচর গ্রামের নেগাবান বাড়িতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দুলাল আকনের নেতৃত্বে বাড়িঘর ভাংচুর ও হামলা চালিয়ে নারীসহ ৬ জনকে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও ইউপি সদস্য অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনাস্থলে মারামারি থামাতে গিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গত ২১ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ১০`টায় এ ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত পুলিশ কোন ব্যাবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে হামলায় আহত ফাতেমা বেগমের স্বামী সোহেল নেগাবান সংবাদকর্মীদের জানান, গত ইউপি নির্বাচনে একই এলাকার নেগাবান বংশের আলিম নেগাবান, সাগর নেগাবান, জসিম নেগাবান, ফাতেমা বেগম ও তার স্বামী ইউপি সদস্য প্রার্থী খোকনকে সমর্থন দেয় এবং তার পক্ষে নির্বাচন করায় প্রতিদ্ধন্দী ইউপি সদস্য প্রার্থী (বর্তমান ইউপি সদস্য) দুলাল আকন তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়। পরবর্তীতে দুলাল আকন নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় তাদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি করে একর পর এক হয়রানি করে যাচ্ছিল।
তারই ধারাবাহিকতায় ঐ ওয়ার্ডের সাগর নেগাবানের উপর পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালায় ইউপি সদস্য দুলাল আকনের ভাগিনা জুলহাস ও মেম্বার বাহিনী। এসময় মেম্বার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য স্থানীয় মসজিদের ইমামের বাসায় আশ্রয় নেন সাগর। কিন্তু সাগর মসজিদের ইমামের ঘরে আশ্রয় নিয়েও মেম্বার দুলাল বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পায়নি। ইমামের ঘরে প্রবেশ করে সাগরকে মারধর করে বাহিরে টেনে হিচরে নিয়ে আসা হয়। পরে সাগরের ডাক চিৎকার শুনে পার্শ্ববর্তী বাড়ির আলিম নেগাবান, জসিম নেগাবান, ফাতেমা বেগম এগিয়ে আসলে তাদেরকেও মারধর করেন হামলাকারীরা।
এসময় সাগর ও আলিম, হোসেন নেগাবান এর ঘর -বাড়ি ভাংচুর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। ঘটনার তীব্রতায় মেম্বার বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আহতরা ৯৯৯ ফোন করে সহায়তা চাইলে এয়ারর্পোট থানার পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বর্তমানে আহতরা শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতরা অভিযোগ করে আরো বলেন, বর্তমানেও মেম্বার বাহিনীর সদস্যরা এলাকায় লাঠিসোডা নিয়ে মহরা দিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দুলাল আকন বলেন, নির্বাচন সংক্রান্ত কোন বিষয় নিয়ে তাদের সাথে কিছু হয়নি আমার। মারামারি হচ্ছে দেখে আমি ইউপি সদস্য হিসেবে মারামারি থামাতে গিয়েছি। কাউকে কোন ধরনের মারধর করিনি। এছাড়া স্বপন ভাইর কোন ক্ষমতা এলাকায় দেখাইনি। প্রতিপক্ষরা র্দীঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে আমাকে ফাঁসানোর জন্য।
বিষয়টি নিয়ে এয়ারর্পোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, দু’পক্ষের মারামারির খবর শুনে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। বর্তমানে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রনে রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের কোন ব্যাক্তি থানায় অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে হামলার ঘটনার একটি ভিডিও সংবাদকর্মীদের হাতে এসেছে। যার মধ্যে মেম্বারের ছেলের হাতে একটি দেশি বগি দা দেখা গেছে। এঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান আহতর পরিবারের সদস্যরা।
কেএস