বঙ্গোপসাগরে উৎপন্ন ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে কুমিল্লার দেবিদ্বারে বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ ছিল। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়ায় যানবাহন চলাচল বিঘ্ন ঘটে। খবর পেয়ে দেবিদ্বার থানা পুলিশের একটি টিম সড়কের গাছপালা সরিয়ে যান চলাচলে স্বাভাবিক করেন। এছাড়াও তীব্র ঝড়ো হাওয়ায় উপজেলার বরকামতা ইউনিয়নের বাতাপুকুরিয়া দুটি ঘর ভেঙে পড়ে তবে এ ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।
এদিকে, পুরো উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালের রোগীরা ভীষণ সমস্যায় পড়েছে। কোনোভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না বাড়িতে বা প্রিয়জনের সঙ্গে। শুধু হাসপাতালেই নয় বিদ্যুৎ সংযোগ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় নানাবিধ সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ। সোমবার রাত ৯টা থেকে পরদিন মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত স্থবির হয়ে পড়ে ছিল জনজীবন।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ফসলের মাঠে আধাপাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন কৃষকরা। দিনভর বৃষ্টিতে কয়েক জায়গায় মাছের ঘের ভেসে যাওয়ার শঙ্কা করছেন মৎসজীবিরা।
মোহনপুর ও বরকামতার কয়েকজন কৃষক জানান, একদিনের বৃষ্টি ও রাতের প্রবল বাতাসে আমন ধানের বেশি ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও গোল আলু, ফুল কপি, বাধা কপি, লাল শাক, মরিচসহ বিভিন্ন শাক সবজির মাঠ ডুবে গেছে। পানি জমে থাকলে এ ফসল নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
স্থানীয় বিকাশ ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন ও মোবাইল ব্যবসায়ী আবু হানিফ জানান, সোমবার রাত থেকে মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ রয়েছে। মোবাইলে বিকাশ ও রিচার্জ করতে পারছি না। কখন নেটওয়ার্ক স্বাভাবিক হয় জানি না।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, সন্ধ্যার পর ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে। বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে পড়ে। খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি টিম কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কসহ উপজেলার কয়েকটি স্থানে ভেঙেপড়া গাছপালা ও বাঁশঝাড় সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন।
দেবিদ্বার উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. গোলাম মাওলা জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর আঘাতে বরকামতা ইউনিয়নের বাতাপুকুরিয়া গ্রামে দুটি ঘর ভেঙে গেছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুতি চলছে।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুর রউফ জানান, টানা একদিনের বৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় আমন ধান ডুবে গেছে। কোথাও প্রবল বাতাসে ফসলের ধান নুয়ে পড়েছে জমিতে। প্রবল ঝড়ে কৃষক ও মৎসজীবীরা ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
দেবিদ্বার পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী দিপক কুমার সিংহ জানান, সোমবার রাতে প্রবল ঝড়ো হাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে বৈদ্যুতিক তার বিচ্ছন্ন হয়ে যায়। কোথাও কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি হেলে পড়েছে। এগুলো মেরামত করে মঙ্গলবার বিকালে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
কেএস