নান্দাইলে অবৈধ প্লাস্টিক হাউজে হুমকির মুখে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০২২, ০২:০৯ পিএম
নান্দাইলে অবৈধ প্লাস্টিক হাউজে হুমকির মুখে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার খারুয়া ইউনিয়নের আব্দুল্লাহপুর ও চানপুর তিন রাস্তা মোড়ে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে চলছে অবৈধভাবে পুরাতন প্লাস্টিক রি-সাইকেল বিন এর কাজ। 

জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে জনবহুল রাস্তার পাশে ফসলাদি ও জনবসতি এলাকায় স্থাপিত হয়েছে ভাই ভাই প্লাস্টিক হাউজ। পরিবেশগত কোন ছাড়পত্র ছাড়াই উক্ত প্লাস্টিক হাউজে বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা পুরাতন রাসায়নিক প্লাস্টিক বোতল বা প্লাস্টিকজাত দ্রবাদি স্বাস্থ্য নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে সেগুলো কেটে কুচা করা হয়।

সরজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, হাউজের শ্রমিকরা খোলা হাতেই সেমস্ত জীবাণূযুক্ত পুরাতন বিভিন্ন রং এর প্লাস্টিক বোতল বা প্লাস্টিকজাত দ্রবাদি বাছাই করে পৃথক পৃথক স্থানে রাখছে। পরবর্তীতে সেগুলো জীবাণুমুক্তকরন না করেই খোলা দু-হাত দিয়েই সেগুলো কেটে কুচা করা হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী উপজেলা ত্রিশাল, ঈশ্বরগঞ্জ ও গফরগাঁও এলাকা থেকে প্রতিদিন মণের পর মণ পুরতান প্লাস্টিক আমদানী করা হচ্ছে এ কারখানায়। এসমস্ত রাসায়নিক প্লাস্টিক বোতল ও প্লাস্টিক দ্রব্যাদির বিষাক্ত গ্যাস ও জীবাণূর কারনে যেমন পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, তেমনি শ্রমিকরা সহ  শ্রমিকদের পরিবারগণেরও স্বাস্থ্য ঝুকিঁ বাড়ছে। এরকম পুরাতন বিষাক্ত প্লাস্টিক বোতলের কারনে বিভিন্ন ধরনের মারাত্মক রোগ সৃষ্টি হতে পারে। পাশাপাশি উক্ত প্লাস্টিক হাউজের আশপাশে থাাকা ফলজ ও বনজ গাছপালার ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। এরকম আবাসিক জনবসতি এলাকা, ফসলাদি ও জনবহুল রাস্তার পাশে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ প্লাস্টিক কারখানা স্থাপন অবশ্যই পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির সম্মুখিন।

এ ব্যাপারে প্লাস্টিক হাউজের কয়েকজন শ্রমিককে জিজ্ঞাসা বাদ করলে তারা জানান, মালিকপক্ষ শুধু তাদেরকে বেতনই দিয়ে থাকেন। করোনাকালীন কয়েকদিন তাদেরকে হ্যান্ডগ্লাভস দিয়েছিলেন। এছাড়া আর কোন খবর নেই।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, এখানে কিছুই বলার নেই। মালিকের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলার কোন সাহস পায় না। ফলে কেউ মুখ খুলতে চায় না। তবে অবৈধ প্লাস্টিক কারখানাটির বন্ধ সহ মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জোর দাবি জানান।  

এ বিষয়ে ভাই ভাই প্লাস্টিক হাউজের শেয়ার পার্টনার মো. কাসেম মিয়া জানান, পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই প্লাস্টিক রি-সাইকেল বিন এর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

তবে প্লাস্টিক হাউজের শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে বলে স্বীকার করে বলেন, চারপাশের ফসলাদি নষ্ট হচ্ছে এমন তো কিছুই দেখছি না। এছাড়া এলাকাবাসীর তো কোন অভিযোগ নেই।

অপরদিকে ভাই ভাই প্লাস্টিক হাউজের পরিচালক রফিকুল ইসলাম সরকারের ভাই ব্যবসায়ী পার্টনার সাঈদ মিয়া জানান, ছাড়পত্রের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। করোনাকালীন অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। আমাদের বিরুদ্ধে এলাকার কোন অভিযোগ নেই। এখানে শুধু পুরাতন প্লাস্টিক বোতল কেটে কুচা করা হয়।

তবে ভাই ভাই প্লাস্টিক হাউজের মালিক রফিকুল ইসলাম সরকারের সেলফোন ০১৭১৯-৯৬০৮১৪ এ নম্বরের যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে নাম্বারটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ের পরিচালক (উপ-সচিব) দিলরুবা আহমেদ জানান, এ বিষয়টি আমাদের অজ্ঞাত ছিল। তবে তথ্য দেন, আমরা সরজমিন তদন্ত করে এর যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

কেএস