বিলুপ্তির পথে বাঁশ ও বেত শিল্প

কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২২, ০২:২০ পিএম
বিলুপ্তির পথে বাঁশ ও বেত শিল্প

নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় সময়ের বিবর্তনে বাঁশ আর বেত শিল্প  হারানোর পথে। আগে বাজারে গেলেই চোখে পড়ত বাঁশ ও বেত শিল্পের বিভিন্ন জিনিস পত্র। বাঁশ আর বেতকেই জীবিকার প্রধান বাহক হিসাবে এখনও যারা আঁকড়ে রেখেছেন তারও ভাল নেই। দিন দিন ঐতিহ্যবাহী বাঁশ আর বেত শিল্পের তৈরি বিভিন্ন পন্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগররা আজ ভাল নেই। জীবন জীবিকার তাগিদে বাপ-দাদার এই পেশাকে ধরে রেখেছে এখনও কিছু সংখ্যক পরিবার।

কেন্দুয়ায় এক সময় গ্রামীণ জনপদের মানুষ গৃহস্থলি, কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে বেঁত ও বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতো। বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত সবখানেই ব্যবহার করা হতো বাঁশ ও বেতের তৈরি আসবাবপত্র। বর্তমানে সল্প দামে হাতের নাগালে প্লাস্টিক সামগ্রী পাওয়ায় বেঁত ও বাঁশ শিল্পের চাহিদা আর নেই। আবার দুষ্প্রাপ্য হয়ে পড়েছে এ শিল্পের কাঁচামাল বাঁশ ও বেঁত। আবার আগের মতো বাড়ীর আশে পাশে বাঁশ ও বেঁত গাছ রাখছে না কেউ। অনেকে বাঁশ ও বেঁত গাছ কেটে বিভিন্ন চাষাবাদসহ ঘর-বাড়ী তৈরী করছে। ফলে বাজারগুলো দখল করেছে প্লাাস্টিক, এলুম্যানিয়াম, স্টিলসহ বিভিন্ন দ্রব্য। তাই যেখানে সেখানে দেখা যায় না আর বাঁশ ও বেত ঝাঁড়।

তবে এখনো গ্রামীণ উৎসব ও মেলাগুলোতে বাঁশ ও বেতের তৈরী খোল, চাটাই, খোলুই, ধামা, টোনা, পালল্টা, মোড়া, দোলনা, বুক সেল্ফ কদাচিৎ চোখে পড়ে। তবে যতই দিন যাচ্ছে ততই কমে যাচ্ছে এই হস্তশিল্পের চাহিদা।

কেন্দুয়ার চিরাং বাজারে বাঁশ-বেত শিল্প বিক্রি করতে আসা সুশীল  চন্দ্র রায় ও মজনু মিয়া বলেন, বেত শিল্পের দুর্দিনে হাতে গোনা কিছু সংখ্যক পরিবার বেতশিল্পকে আঁকড়ে ধরে আছেন। অনেকে এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় গেলেও, পূর্বপুরুষের হাতেখড়ি এই পেশাকে কিছুতেই ছাড়তে পারেননি তারা। প্রতিদিন তাদের তৈরি কিছু পণ্য কেন্দুয়া পৌরসভা, চিরাং বাজার, রোয়াইল বাজার, রামপুর বাজার, বৈখেরহাটি বাজার সহ গ্রাম-গঞ্জে নিয়ে ফেরি করলে, কিছু সৌখিন মানুষ আছে তাদের পণ্য কিনেন। বেলা শেষে যা বিক্রি হয় তা দিয়ে তাদের জীবন-জীবিকা চলে।

কেএস