রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার হাবাসপুর জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রামপ্রসাদ মালাকর দেড় বছর যাবত ব্যাংকে তথ্য গোপন করে সভাপতির স্বাক্ষর ছাড়াই লক্ষাধিক টাকা উত্তোলন করেছেন। পাশাপাশি জাতীয় শোক দিবস ও শেখ রাসেল দিবসের অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগও পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে।
এসব বিষয়ে গত ২৯ অক্টোবর ‘শিক্ষকের বিরুদ্ধে শেখ রাসেল দিবসের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ’ শিরোনামে আমার সংবাদ পত্রিকার অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ হয়।
প্রকাশিত সংবাদটি নজরে এনে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে আহবায়ক ৩ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করে উপজেলা প্রশাসন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আম্বিয়া সুলতানা জানান, আমার সংবাদে প্রকাশিত সংবাদটি প্রশাসনের নজরে এসেছে। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
অপরদিকে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তার জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, আমার সংবাদে রিপোর্টটি প্রকাশের পর বিজয়ী শিক্ষার্থীদেরকে ডেকে পুরস্কার গুলো দিয়ে দেয় হয়।
উল্লেখ্য, হাবাসপুর জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান কমিটি গঠন হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে। কমিটির সভাপতি শাপলা রানী দাস। ২০২১-২২ অর্থ বছরে স্লিপ ফান্ডে ৫০ হাজার টাকা, রুটিন মেরামত ৪০ হাজার, প্রাক-প্রাথমিক খাতে ১০ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন খাতে লক্ষাধিক টাকা অর্থ ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা হলেও বর্তমান সভাপতির স্বাক্ষর নেয়া হয়নি। এছাড়াও জাতীয় শোক দিবসে রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করার কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষক এসব অনুষ্ঠান দায়সারা করেন বলে অভিযোগ। প্রত্যেক বিজয়ী শিশুদেরকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বই উপহার দেয়ার কথা থাকলেও বিগত বছরে ক্রয়কৃত বই শিশুদের মধ্যে বিতরণ করেন প্রধান শিক্ষক, যা পরবর্তীতে ফেরত নেয়া হয় বলে অভিযোগ। গত ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেল দিবসে শিশুদের মধ্যে চিত্রাংকন, কুইজ, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বিজয়ী শিশুদের মধ্যে গত বছরের ক্রয়কৃত বই ৪-৫ জনকে মিলে একটি পুরস্কার ও একাধিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের একটি পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিতরণকৃত পুরস্কার কয়েকদিন পর শিশুদের থেকে ফেরত নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন কমিটির সদস্য ও কয়েকজন শিক্ষক।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রাম প্রসাদ মালাকর শিক্ষার্থীদের পুরস্কার দিয়ে ফেরত নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। সোনালী ব্যাংকে সভাপতি ও তার নামে যৌথ হিসাবের বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো অপারেটর (সভাপতি) পরিবর্তন করা হয়নি। সাবেক সভাপতি রুপনের স্বাক্ষরে পরিচালিত হচ্ছে বলে স্বীকার করেন। ২০২১-২২ অর্থ বছরের স্লিপ ফান্ড ও অন্যান্য ফান্ডের টাকা উত্তোলন করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।
কেএস
আমার সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
