অভিনব পন্থায় ভূয়া ডিবি সেজে প্রতারণার অভিযোগে কুমিল্লায় দুই নারীসহ চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। চট্টগ্রাম ও কুমিল্লার বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে পুলিশের বেশকিছু সরঞ্জামাদিসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দুপুরে জেলা ডিবি কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বিপিএম (বার) এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রংপুর জেলার বাসিন্দা জনৈক সাইফুল ইসলাম প্রায় এক মাস আগে কুমিল্লায় এসে দিনমজুরের কাজ করতো। গত ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় প্রতারক চক্রের দুই সদস্য নগরীর চকবাজার এলাকায় ভালো কাজের প্রলোভন দেখিয়ে তার মোবাইলে থাকা সকল নাম্বার কপি করে ওই মোবাইলটি তাদের নাম্বারে ডাইভার্ট করে দেয়। একপর্যায়ে তার স্বজনদের কাছে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনায় সাইফুল ইসলামের পরিবার ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে সহায়তা চায় এবং জেলা ডিবি অফিসে যোগাযোগ করেও সন্ধান পায়নি। পরবর্তীতে গত ৩১ অক্টোবর অজ্ঞাতনামা প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের দায়ের করেন ভূক্তভোগী সাইফুল ইসলাম। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় দুই নারীসহ চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে ডিবি লেখা একটি খাকী কটি জ্যাকেট, একটি হাতকড়া, দুই রাউন্ড গুলি, একটি চাকু ও ৯টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার চুরোক মিয়ার ছেলে সবুজ মিয়া (২৭), কালিউতা গ্রামের সবুর মিয়ার ছেলে রতন মিয়া, কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বড় আলমপুর গ্রামের মোশারফ হোসেনের ছেলে মইন উদ্দিন (২০), মুরাদনগর উপজেলার শহিদ মিয়ার ছেলে ওসমান গণি (৩৫), বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার আমতলীপাড়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম (২০), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কালিউতা গ্রামের সবুজ মিয়ার স্ত্রী আখি নূর (২৩) ও কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা বাজার গ্রামের ওসমান গণির স্ত্রী সোনিয়া বেগম ওরফে ফরিদা (২৯)।
এ সময় প্রেসব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিক্তি পুলিশ সুপার (সদ্য পদোন্নিতপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) কাজী মোঃ আব্দুর রহীম, অতিক্তি পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) খন্দকার আশফাকুজ্জামান বিপিএম, জেলার গোয়েন্দা (ডিবি) শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ বড়ুয়াসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ভূয়া ডাক্তার সেজে করোনাকালীন সময়েও করোনা সার্টিফিকেট জালিয়াতির ঘটনায় র্যাবের দায়ের করা একটি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে।
কেএস