রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলা

কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাক্ষীকে গলা কাটার হুমকি

সফিউল আলম, কক্সবাজার প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২২, ০৬:০৯ পিএম
কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাক্ষীকে গলা কাটার হুমকি

রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার সাক্ষিকে ইশরায় গলা কেটে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা এক আসামি।

মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) কক্সবাজারের অতিরিক্ত দায়রা জজ আবদুল্লাহ আল মামুন এর আদালতে সাক্ষ্য প্রদানকালে নূরে আলম নামের এক সাক্ষিকে এ হুমকি দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম।

কোন আসামি এ হুমকি দিয়েছেন তার নাম প্রকাশ করেননি রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী। তিনি জানান, দ্বিতীয় দফায় ২ জন আসামি তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। অপর সাক্ষি ছিলেন হামিদ মাঝি। মঙ্গলবার সকাল ১০ টার থেকে ২ টা পর্যন্ত চলে এই সাক্ষ্য গ্রহণ। এসময় আসামি পক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষিদের জেরা করেন।

ফরিদুল আলম জানান, নূরে আলম ও হামিদ মাঝি এ মামলার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষি। ঘটনার দিন কাকে কাকে দেখেছেন, কারা গুলি করেছেন এসব বর্ণনা দিয়েছেন। বুধবার এ মামলার আরো কয়েকজন সাক্ষিকে আদালতে উপস্থাপন করা হবে।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মামলার সাক্ষিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, আদালতে দাঁড়িয়ে গলা কাটার হুমকির বিষয়টি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হয়েছে।

এর আগে সোমবার (৩১ অক্টোবর) মামলার বাদি নিহতদের ভাই হাবিবুল্লাহ আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী জানান, মিয়ানমার থেকে বাস্ত্যুচুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য জোরালোভাবে ভূমিকা পালন করায় সন্ত্রাসীদের এক গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহ ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার কুতুপালংয়ের লম্বাশিয়া ১-ইস্ট নম্বর ক্যাম্পের ডি ব্লকে নিজ সংগঠনের কার্যালয়ে মুখোশধারী বন্দুকদারিদের গুলিতে নিহত হন। হত্যাকাণ্ডের পরদিন মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ সাড়ে আট মাস তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উখিয়া থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) গাজী সালাহ উদ্দীন ২৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এতে সাত জনের নাম ঠিকানা সঠিক পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদানের জন্য আবেদন জানান তদন্তকারি কর্মকর্তা। অভিযোগপত্রে ৩৮ জনের নাম ও ঠিকানা সাক্ষীর তালিকায় রয়েছে। 
আদালত শুনানী শেষে ১১ সেপ্টেম্বর ২৯ জন আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন। ওইদিন আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১১ অক্টোবর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য ছিল।

বর্তমানে মুহিবুল্লাহ’র পরিবারের ২৫ জন সদস্য কানাডায় বসবাস করছেন। প্রথম দফায় ৩১ মার্চ স্ত্রীসহ ১১ জন এবং দ্বিতীয় দফায় ২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ জন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে কানাডা পাড়ি জমান জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার সহায়তায়।

কেএস