দাকোপের খরস্রোতা ঝপঝপিয়া ও পশুর নদীর ভাটার সময় উপজেলার পাউবো’র ৩১নং পোল্ডারের পানখালী ফেরীঘাটের পূর্ব পাশে সোমবার (৭ নভেম্বর) ভোর আনুঃ ৫ টায় প্রায় ১শত মিটার বাঁধ মুহুর্তের ভিতরে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এ ভয়াবহ নদী ভাঙ্গনকে কেন্দ্র করে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা গ্রামবাসীর মাঝে। যে কোন মুহুর্তে বাঁধের বাকি অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গোটা গ্রাম ও পোল্ডার প্লাবিত হওয়ার শংখায় ভাঙন এলাকা থেকে অনেক পরিবারকে তাদের বসতঘর বাড়ি ও স্থাপনা অন্যত্র সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। এ ভাঙনকে কেন্দ্র করে এলাকার শতশত কৃষক সম্পূর্ণ ভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাদের চোখে মুখে যেন হতাশের চিহৃ, কখন না বাকি বাঁধ টুকু নদী গর্ভে বিলীন হয়ে তাদের স্বপ্নের আমন ফসল প্লাবিত হয়।
জানা গেছে, ভৌগোলিক কারণে সমুদ্র উপকূলীয় খুলনার দাকোপ উপজেলাটি মুলত তিনটি দ্বীপ নিয়ে অবস্থিত। সে অনুযায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন এ তিনটি দ্বীপ তিনটি পোল্ডারে বিভক্ত। যেমন ৩১,৩২ ও ৩৩নং পোল্ডার। পাউবোর ৩২ ও ৩৩নং পোল্ডারের বেড়িবাঁধ বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে যগোপযোগী করে বাঁধ নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন হওয়ার পথে। কিন্তু পাউবোর ৩১নং পোল্ডারের ৮ থেকে ১০টি স্থানে অধিক ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধ নির্মাণে এখনো পর্যন্ত কোন কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এ কারণে এ ৩১নং পোল্ডারের ১টি পৌরসভা ও ২টি ইউনিয়ন বাসীদের থাকতে হয় সর্বক্ষণ বাঁধ ভাঙ্গা আতংকে। বিশেস করে এ পোল্ডারের অব্যহত নদী ভাঙ্গনে শিকারে প্রায় নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে কৃষিজমি, বসতঘরবাড়ি, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, নানাস্থাপনাসহ অসংখ্য গাছপালা। ভয়াবহ নদী ভাঙ্গনের শিকারে মানচিত্র থেকে ছোট হয়ে আসছে এ উপজেলার উপকূলীয় এলাকা। ঝুকিপূর্ণ বাঁধ গুলি দ্রুত সংস্কার ও বিকল্প বাঁধ নির্মাণের জন্য অত্র পোল্ডার বাসী প্রধানমন্ত্রীর আশু ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানিয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গ্রামবাসীদের রক্ষার্থে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষ পানখালী ফেরীঘাট সংলগ্ন ঝপঝপিয়া ও পশুর নদীর মোহনায় নদী গর্ভে বিলীন হওয়া বেড়িবাঁধে প্রাথমিক ভাবে জিও ব্যাগ ও ছিনথেটিক ব্যগে বালু ফেলে কাজ শুরু করেছেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্থ ওই গ্রামের বাসিন্দা সমীর রায়, দেবাশিষ রায়, মহানন্দ রায়, অধির রায়, নিখিল রায়, জয়ন্ত রায়, ঠাকুর দাস রায়, নান্টু রায়, তাপস রায় পূর্বে ঐ এলাকায় নদী ভাঙনে তাদের কৃষি জমিসহ বসতঘর বাড়ি, নানা স্থাপনা বিলীনের ফলে নানা ভোগান্তির কথা তুলে ধরেন।
পানখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ সাব্বির আহম্মেদ জানান, এ বাঁধটি দনী গর্ভে বিলীন হওয়ার আগে বাঁধে ফাঁটল ধরলে আমি পাউবোর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বললেও তারা এগিয়ে না আসায় ওই বাঁধটি সোমবার ভোরের ভাটায় ঝপঝপিয়া নদী গর্ভে বিলীন হয়। এ বাঁধটির পাশ দিয়ে দ্রুত বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করা না হলে যে কোন মুহুর্তে বাঁধের বাকি অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে সমগ্র ৩১নং পোল্ডার প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সুজাত কর্মকার বলেন, নদী গর্ভে বিলীন হওয়া বাঁধের ভাঙনের স্থলে বালু ভর্তি জি ও ব্যাগ ও ছিনথেটিক ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এ ছাড়া উক্ত স্থানে জিও টিউব ও মাটির কাজও করার প্রস্তুতি চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিন্টু বিশ্বাস বলেন, পানখালী ফেরীঘাটের পূর্ব পাশে ঝপঝপিয়া ও পশুর নদীর মোহনায় নদী গর্ভে বিলীন হওয়া পানখালী গ্রামের বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। এ বাঁধটি সংস্কারে জন্য সংশ্লিষ্ট পাউবোর উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে নিদ্দেশনাসহ জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবগত করার পর পাউবো ভাঙ্গন কবলিত স্থানে কাজ শুরু করেছেন বলে তিনি জানান।
কেএস