ফরিদপুরে ‘ব্ল্যাক রাইস’ চাষে তরুণ উদ্যোক্তার বাজিমাৎ

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর প্রকাশিত: নভেম্বর ৮, ২০২২, ১২:৩৯ পিএম
ফরিদপুরে ‘ব্ল্যাক রাইস’ চাষে তরুণ উদ্যোক্তার বাজিমাৎ

ফরিদপুরে ঔষধি ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ‘ব্ল্যাক রাইস’ চাষ করে তরুন কৃষি উদ্যোক্তা হাসিবুল হাসান রন্টি বাজিমাৎ করেছেন। প্রায় দুই বিঘা জমিতে এ ধানের চাষ করেছেন তিনি। এতে বাম্পার ফলন হয়েছে তার। ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নে হাসিবুল হাসান রন্টির ধান খেত। তার বাড়ি ফরিদপুর শহরের আলীপুর।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া থেকে ব্ল্যাক রাইচ ধানের বীজ সংগ্রহ করেছেন তিনি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক সহযোগিতায় দুই বিঘা জমিতে প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ মন ধানের ফলন হবে। এরই মধ্যে কৃষকদের হাতে ব্ল্যাক রাইচ ধান পৌঁছে দিতে তার এ ধানকে বীজ হিসেবে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করবে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

তরুন কৃষি উদ্যোক্তা হাসিবুল হাসান রন্টি বলেন, ইউটিউবে প্রথম এই ধানের চাষাবাদের বিষয়ে দেখেন ও  বিস্তারিত জানেন। পরে অনলাইনে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার বীজ সংগ্রহ করেন। প্রায় ২ হাজার টাকা কেজি দরে দুই কেজি ব্ল্যাক রাইচ ও দুই কেজি গোল্ডেন ব্ল্যাক রাইচ ধানের বীজ সংগ্রহ করেন। ব্ল্যাক রাইচের চালটা একটু মোটা ও গোল্ডেন ব্ল্যাক রাইচের চাল চিকন। ৭৫ দিন হল ধান লাগিয়েছি। আর দু সপ্তহের মধ্যে ধান কাটতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সব সময় পর্যবেক্ষেন ও সহায়তা করছে। তারা আমার এ ধানকে বীজ হিসেবে সংগ্রহ করবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও অন্যান্য কৃষকদের কাছ থেকেও প্রচুর সারা পেয়েছি। এরই মধ্যে আমার কাছে ১ হাজার টাকা কেজি দরে ধান বীজ হিসেবে নেওয়ার জন্য কয়েকজন কৃষক অর্ডার করে রেখেছে। তিনি আরও বলেন, ধান চাষের পাশাপাশি সৌদিআরবের খেজুর বাগান, মাল্টার বাগান করেছি। এছাড়াও আমার একটি গরুর ফার্ম আছে। সেখানেও আমি সফলতার মুখ দেখেছি।

ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের  সূত্রে জানা গেছে, ব্ল্যাক রাইচ পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও বাজারে দাম বেশি হওয়ায় দিন দিন কালো ধানের আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছেন চাষিরা। যা ‘কালো ধান’ নামে পরিচিত।এক সময় চীনের রাজা-বাদশাহদের সুস্বাস্থ্যের জন্য কালো ধান চাষ হতো। তবে এ ধান প্রজাদের জন্য ছিল নিষিদ্ধ। ঔষধি গুণাগুণের কারণে এই ধান চাষে ইচ্ছা জাগে হাসিবুল হাসান রন্টির। এ ধান এ এলাকায় নতুন। কিন্তু ঔষধি ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ হওয়ায় এ ধান চাষে কৃষককে উদ্ভুদ্ধ করছি। আর রন্টির এ ধানকে বীজ হিসেবে গ্রহন করে এ অঞ্চল ও আশেপাশের অঞ্চলের কৃষককে সরবরাহ করবো। এর ফলে কৃষক কম দামে এ ধান সংগ্রহ করতে পারবে। এই ধানের চালের ভাত খেলে অনেক রোগবালাই কমে যায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ জিয়াউল হক বলেন, সাধারণ ধানের চেয়ে কালো ধানের দাম ও চাহিদা অনেক বেশি। কালো ধানে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের রোগপ্রতিরাধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ফাইবার হার্টকে রাখে সুস্থ। এছাড়া ডায়াবেটিস, স্নায়ুরোগ ও বার্ধক্য প্রতিরোধক এই ধানের চাল।

তিনি আরও বলেন, গোল্ডেন ব্ল্যাক রাইচ ধানগাছগুলো বেশ সুন্দর এবং অন্যান্য ধানগাছের মতোই সবুজ। শুধু ধানগুলো কালো। আর এই কালো ধান থেকেই বের হবে কালো রংয়ের চাল। আর ব্ল্যাক রাইচ ধানের গাছও কালো। ধানের বাইল গুলিও কালো। চালও কালো।

কেএস