চলনবিলে দেশীয় জাতের মাছের শুটকি উৎপাদন ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২২, ০২:০৩ পিএম
চলনবিলে দেশীয় জাতের মাছের শুটকি উৎপাদন ব্যস্ত ব্যবসায়ীরা

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার প্রবাহমান মৎস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও শুরু হয়েছে দেশীয় জাতের মাছের শুটকি উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু। শুটকি উৎপাদনের লক্ষে এ অঞ্চলের ২শতাধিক শুটকি চাঁতালে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঝে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি ও বর্ষার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছ কিছুটা কম হওয়াতে তাদের শুটকি করতে সমস্যায় পড়ছিলেন।
মৎস্য ভান্ডারখ্যাত চলনবিলের সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, পাবনার চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর, নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বির্স্তীণ এলাকার বিভিন্ন স্থানে শুটকি উৎপাদনে চাতাল তৈরি করেছেন ব্যবসায়ীরা।

সরজমিনে এসব চাঁতালে গিয়ে দেখা যায়, দেশীয় প্রজাতির টেংরা, পুঁটি, খলসে, বাতাসি, চেলা, মলা, টাকি, বাইম, শোল, গুতম, বোয়াল, গজার, মাগুর, শিং, কৈ, নন্দই, বেলেসহ নানা প্রজাতির সুস্বাদু মাছের শুটকি করা হচ্ছে।

জানা যায়, সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত এ অঞ্চলের শুটকি ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মাছের আড়তের আশপাশে চাঁতাল তৈরি করে এসব শুটকি উৎপাদন করেন। প্রতি চাঁতালে ১০ থেকে ১৫ জন শ্রমিক কাজ করেন। এদের মধ্যে অবশ্য সংখ্যায় নারী শ্রমিক বেশি। এসব চাঁতালে তৈরি শুটকি এলাকার চাহিদা মেটানোর পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হবে। প্রতিমণ কাঁচা মাছ ৭ হাজার’ থেকে ১০ হাজার টাকা দরে কেনা হয়। পরে প্রতি ৩ কেজি কাঁচা মাছ থেকে ১ কেজি শুটকি তৈরি করা হয়। এসব শুটকি মাছ প্রকারভেদে প্রতি মনে ২ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করেন তারা।

শুটকি ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমে চলনবিলে প্রচুর পরিমাণে মাছ ধরা পরে। সকালে কিংবা বিকেলে এসব মাছ স্থানীয় আড়ত থেকে কিনে আনেন তারা। পরে চাঁতালে নিয়ে শুকিয়ে শুটকি করেন। তবে শহরাঞ্চলে এর দাম একটু বেশি। চলনবিলে শুটকি তৈরি শুরু হলেও তা বাজারজাত করতে আরও মাসখানেক সময় লাগবে। তারা শুটকি তৈরি করে প্যাকেট জাত করে। তারপর শুস্ক মৌসুমে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকেন। আবার কেউ কেউ চাতালে তৈরি শুটকি মাছ গুলো ১০-১৫ দিনের ব্যবধানে চাতাল থেকেই পাইকারদের নিকট বিক্রি থাকেন।

চাতাল মালিক আহম্মেদ আলী জানান, শুটকি ব্যবসায় অনেক লাভ রয়েছে। তা ছাড়া চলনবিলের মাছের শুটকির চাহিদাও ব্যাপক। চাতাল গুলোতে টেংরা, পুটি, খলসে,বাতাসী, চেলা, মলা, ঢেলা ,টাকি, গুতম, চিংরী ,টাকি সহ নানা মাছ চাটাইয়ে শুকানোর জন্য ছিটিয়ে রাখা রয়েছে।

তাড়াশ উপজেলা মৎস্য অফিসার মশগুল আজাদ জানান, শুধু গত বছরে তাড়াশ উপজেলাতেই ১৪৭ মেট্রিক টন শুটকি উৎপাদন হয়। শুটকির উৎপাদন গত বছরের চেয়ে বেশি হবে বলে আশা করছি।  

কেএস