সরকারি স্কুলে ঝুলছে তালা!

ফরহাদ ইসলাম, জলঢাকা (নীলফামারী) প্রকাশিত: নভেম্বর ১৫, ২০২২, ০২:৪৬ পিএম
সরকারি স্কুলে ঝুলছে তালা!

নীলফামারীর জলঢাকায় নিজেদের খেয়াল খুশি মতো স্কুল করেন এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক এবং স্থানীয়দের দির্ঘদিনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে ২/৩ দিন গিয়ে এমনি প্রমাণ মিলেছে। ঘটনাটি উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের উত্তর ভাবনচুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

সর্বশেষ মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৯ টায় সরেজমিনে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ১০ টা অতিবাহিত হলেও স্কুলের প্রধান গেট এবং শ্রেনিকক্ষের রুমে তালা ঝুলছে। সে সময় পর্যন্ত ওই স্কুলে থাকা ৪ জন শিক্ষক বা শিক্ষার্থীর উপস্থিতিও চোখে পড়েনি। একটু পরে ফজিলাতুন নেছা নামে স্থানীয় এক নারী স্কুলের মেইন গেটের তালা খুলে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করছেন।

এসময় ফজিলাতুন নেছার সাথে কথা হলে তিনি জানান, মাসিক নাস্তা খাওয়ার বেতনে স্কুল প্রতিষ্ঠা থেকেই তিনি এ দায়িত্ব পালন করছেন। স্কুলে শিক্ষকদের দেড়িতে আসার বিষয়টি প্রতিদিনের নিয়ম বলে জানান তিনি। এরপর ১০ টা ২৮ মিনিটে ৪ জন শিক্ষকের মধ্যে মাত্র ১ জন সহকারি শিক্ষক স্কুলে প্রবেশ করেন। এবং সবশেষে বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে স্কুলে প্রবেশ করেন প্রধান শিক্ষক মির্জা সোবাহানা। এছাড়াও খাতায় কলমে ওই স্কুলে মোট ১৪৭ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বাস্ততে তার কোনই মিল নেই। সঠিক সময়ে স্কুল না খোলায় দিন দিন ওই স্কুলের শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষক প্রতিনিয়ত সকাল সাড়ে ১১ টা থেকে ১২ টার মধ্যে স্কুলে আসেন। আর সহকারি শিক্ষকরা ১০ টার পরপরই উপস্থিত হন। আগে এই স্কুলে অনেক শিক্ষার্থী ছিল,এখন ৫ টি শ্রেণিতে মোট ৩০ থেকে ৩৫ জন শিক্ষার্থী নিয়মিত রয়েছে।’’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই স্কুলের এক সহকারি শিক্ষক বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষক সঠিক সময় আসলেই সহকারি শিক্ষকরা এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। আর প্রধান শিক্ষক স্কুলে দেড়িতে আসার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকের কাছে বলেও কোন প্রতিকার পাইনি।’’

স্কুলে প্রতিনিয়ত দেড়িতে আসার বিষয়টি স্বীকার করে উত্তর ভাবনচুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মির্জা সোবাহানা বলেন, ‘‘স্কুলে আসতে আমার ১০ টা থেকে সাড়ে ১০টা বেজে যায়, আর অফিসের কাজ থাকলে ১১ টা ১২ টাও বেজে যায়। পরবর্তীতে সঠিক সময়ে স্কুলে আসার চেষ্টা করবো।’’

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার ও উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ মোশফেকুর রহমান বলেন,‘‘প্রধান শিক্ষক মির্জা সোবাহানা কোন ছুটি নেননি,বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’’

এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন,‘‘সরকার নির্ধারিত সময়ে কেউ স্কুল না করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’

এআই