মাতামুহুরী নদীতে চলছে বালু লুটের মহোৎসব

মোহম্মদ উল্লাহ, চকরিয়া প্রকাশিত: নভেম্বর ২৩, ২০২২, ০২:৪৪ পিএম
মাতামুহুরী নদীতে চলছে বালু লুটের মহোৎসব

চকরিয়া উপজেলার মানিকপুরে মাতামুহুরী নদীর জেগেউঠা চর কেটে বালু লুটের মহোৎসব চলছে। পাশাপাশি নদীতে অবৈধভাবে সেলো মেশিন বসিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। অভিযোগ উঠেছে, মাতামুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে জড়িত রয়েছেন স্থানীয় জাহেদুল ইসলাম সিকদার নামের অস্ত্র মামলার আসামি।

ইতোপূর্বে চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালী এলাকায় পুলিশের হাতে অবৈধ অস্ত্র সহ দিনদুপুর ডাকাতি করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছিল। অভিযুক্ত জাহেদুল ইসলাম সিকদার অস্ত্র মামলায় দীর্ঘদিন ধরে কারাভোগের পর জামিনে এসে এবার মাতামুহুরী নদী থেকে বালু লুটে নেমেছে।

স্থানীয় লোকজনের দাবি, বালু উত্তোলনে কক্সবাজার জেলা অথবা চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের বৈধ অনুমতি না থাকলেও শুধুমাত্র পেশিশক্তির দাপট দেখিয়ে অভিযুক্ত জাহেদ সিকদার বেশকিছু দিন ধরে মাতামুহুরী নদী থেকে  অবৈধভাবে বালু লুটের মহোৎসব শুরু করেছে।  তিনি শক্তিশালী স্কেভেটর গাড়ি দিয়ে নদীতে জেগে উঠা চর কেটে বালু উত্তোলন পুর্বক প্রতিদিন ১৫/২০ টি ডাম্পার ট্রাকে অন্যত্র বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, নদীর জেগে উঠা চর কেটে ও নদীতে সেলো মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে তীরবর্তী এলাকার জনবসতি হুমকির মুখে পড়েছে। এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে আগামী বর্ষাকালে মানিকপুর ১ নং ওয়ার্ডের উত্তরপাড়া এলাকার অন্তত ৫শতাধিক বসতবাড়ি ও আবাদি জমি নদীতে বিলিন হয়ে যাবে এইধরনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাতামুহুরী নদীর মানিকপুর উত্তরপাড়া অংশের অন্তত এক কিলোমিটার জেগেউঠা চর অবৈধভাবে দখলে নিয়েছেন জাহেদ সিকদার। নদীর জেগেউঠা চরের বেশিরভাগ জমির মালিক কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক। জমির মালিকানা বিষয়ে উল্লেখ আছে, মাতামুহুরি নদীর মানিকপুর উত্তরপাড়া অংশের ওই জমি জেলা প্রশাসনের ১নং খাসখতিয়ানের অধীনে নথিভুক্ত জমি।

অথচ জেলা প্রশাসনের খাস খতিয়ানের মালিকানাধীন মাতামুহুরী নদীর জেগে উঠা এক কিলোমিটার চর দখলে নিয়ে অভিযুক্ত জাহেদ সিকদার গেল কয়েকবছর ধরে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে রকমারি সবজি চাষের জন্য বর্গা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে বিপুল টাকা। এবছর সেই জেগেউঠা চর স্কেভেটর গাড়ি দিয়ে কেটে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন পুর্বক বাণিজ্য চালাচ্ছে।

পাশাপাশি তিনি নদীতে সেলো মেশিন বসিয়ে উত্তোলন করছেন বালু। জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া খাস খতিয়ানের সরকারি মালিকানাধীন মাতামুহুরী নদীতে জেগেউঠা চর কেটে বালু উত্তোলনের বিষয়টি তিনি স্বীকার বলেন আমার এলাকারবালু আমি না তুলে কে তুলবে।

তিনি আরো বলেন, মাতামুহুরী নদীতে জেগেউঠা চর কারো বাপের জমি নয়। জেগেউঠা চর কেটে বালু উত্তোলন করছি আপনাদের কি সমস্যা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন করেন।

বিষয়টি জানানো হলে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, জেলা প্রশাসনের ইজারা দেওয়া মহাল ছাড়া অন্য যে কোন স্থান থেকে বালু উত্তোলন করা আইনগতভাবে অবৈধ। মাতামুহুরী নদীতে জেগেউঠা চর কেটে বালু উত্তোলন করার বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে। এ ব্যাপারে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এআই