মুন্সীগঞ্জে কমেছে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

আবু হানিফ রানা, মুন্সীগঞ্জ প্রকাশিত: নভেম্বর ২৪, ২০২২, ১২:৪২ পিএম
মুন্সীগঞ্জে কমেছে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

মুন্সীগঞ্জ দেশের অন্যতম আলু উৎপাদনকারী জেলা। এই জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল আলু। এ বছর জেলায় আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার ৭৯৬ হেক্টর যা গত বছর ছিল ৩৭ হাজার ৯০০ হেক্টর। ফলে এবার আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ২ হাজার ১০৪ হেক্টর।

এবার আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ লাখ ৯৭ হাজার ১৪৭ মেট্রিক টন। গত বছর ছিল ১১ লাখ ৮৫ হাজার ৯৫ মেট্রিক টন। কিন্তু গত বছর মৌসুমে বৃষ্টির কারণে আলু আবাদ কম হওয়ায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। জেলার প্রধান উৎপাদিত ফসল আলু হওয়ায় এ জেলার অধিকাংশ কৃষকই শীত মৌসুমে আলু আবাদ করে থাকে। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ছাড়াও ধান রোপণ করা হয়ে থাকে।

মুন্সীগঞ্জের প্রধান ফসল চালু হলেও আলু চাষী কৃষকরা বিগত কয়েক বছর ধরে আলুতে ব্যাপক লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। এ বছর আবার বেড়েছে শ্রমিক ও সারের দাম। তাই কৃষক ব্যয়বহুল আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।

মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ৩৫ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের আশা করা হচ্ছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ৯ হাজার ৬৮০ হেক্টর, টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর, সিরাজদিখান উপজেলায় ৯ হাজার ১৯১ হেক্টর, লৌহজং উপজেলায় ৩ হাজার ৩৬০ হেক্টর, শ্রীনগর উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর ও গজারিয়া উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হবে।

এদিকে সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নে কৃষকদের আগাম আলু আবাদ করতে দেখা যাচ্ছে। এখানকার জমিগুলো একটু উঁচু। তাই কৃষকরা এ এলাকায় আগাম আলু আবাদ করে থাকেন। এতে আলুর দামও বেশি পাওয়া যায়।

কৃষক জাকির হোসেন বলেন, আমাদের চরকেওয়ার ইউনিয়নের ফুলতলা ও টরকি এলাকার রাস্তার পাশের জমিগুলো একটু উঁচু। তাই আমরা এখানে আগাম আলু আবাদ করে থাকি। কয়েক বছর ধরে আলুতে ভালো লাভ হয় না। তারপরও আমরা আলু আবাদ করি। আমি ৪০ শতাংশ জমিতে আলু আবাদ করেছি। আরও আলু আবাদ করব।

সিরাজদিখান উপজেলার বালুরচর ইউনিয়নের কৃষক লেয়াকত আলী বলেন, বালুরচর ইউনিয়নটি উঁচু থাকায় আমরা আগাম আলু আবাদ করি। এ বছর ৬০ শতাংশ জমিতে আলু চাষ করেছি। আশা করি লাভ হবে। তবে বীজ আলু, সার ও শ্রমিকের দাম বেড়েছে।

মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম আমার সংবাদকে বলেন, এ মৌসুমে জেলায় ৩৫ হাজার ৭৯৬ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানকার কৃষকরা অরিকো, মালতা, ডায়মন্ড, পেরটোনাইস ও বিএডিসির আলু রোপণ করে থাকে।
তিনি আরও বলেন, কীভাবে আলু চাষ করতে হবে, চারাগাছে কীভাবে কীটনাশক ব্যবহার ও সংরক্ষণ করা যায় এসব বিষয়ে কৃষকদের অবহিত করা হচ্ছে। তবে কৃষকদের আলু চাষ কম করে বিকল্প ধান, সরিষা ও শাকসবজি আবাদের অনুরোধ করছি।

কেএস