শনিবার ৩ ডিসেম্বর বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। হাজী মুহম্মদ মহসিন উচ্চ বিদ্যালয় (ঐতিহাসিক মাদ্রাসা) মাঠে এ বিভাগীয় সমাবেশটি হবে, বিএনপি ঘোষিত ঢাকার বাইরে অনুষ্ঠিত শেষ সমাবেশ। এ উপলক্ষে রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলার বিএনপি নেতাকর্মীরা পার করছেন ব্যস্ত সময়। গতকাল পুলিশ ৮ শর্তে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দেয় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (অরএমপি)।
সমাবেশের দু’দিন আগেই রাজশাহীর বিভিন্ন জেলা থেকে অসতে শুরু করেছে বিএনপির নেতা কর্মীরা। বৃহস্পতিবার থেকে পরিবহণ ধর্মঘট থাকায় তারা সমাবেশ সফল করতে আগাম চলে এসেছেন রাজশাহীতে, অবস্থান নিয়েছেন মাদ্রাসা মাঠের পাশে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ, পদ্মা নদীর তীরসহ আশ পাশের খোলা জায়গায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন জেলা থেকে আসা নেতা কর্মীরা তাঁবু গেঁড়ে আশ্রয় নিয়েছেন মাঠে। রান্না হচ্ছে প্রতিটি তাঁবুর সামনে। নেতা কর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ, তবে পরিবহণ ধর্মঘট থাকায় পথে পথে ভোগান্তির জন্য সরকারকে দায়ী করে নানান বক্তব্য দেন সমাবেশে আগত নেতাকর্মীরা।
জয়পুরহাট থেকে আসা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শামস মতিন বলেন, পরিবহণ ধর্মঘটের কারণে তিনদিন অগেই চলে আসতে হয়েছে। আমাদের জয়পুর হাট থেকে আসা অন্তত ১ হাজার কর্মীকে পুলিশ ফিরিয়ে দিয়েছে।
নাটোর থেকে আসা বিএনপি দলীয় এক কর্মী বলেন আমরা চরম বাধা উপেক্ষা করে রাজশাহীতে পৌঁছেছি। পথে পথে পুলিশি বাধা মোকাবিলা করতে হয়েছে বারবার। বাস থেকে নামিয়ে দিলে অটোতে উঠি সেখানেও আটকে দেয় পুলিশ অবশেষে পায়ে হেটে মাদ্রাসা মাঠে এসেছি।
বগুড়ার গাবতলি পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম পিন্টু বলেন, আমরা হাজার হাজার বিএনপির কর্মী বুধবার রাতেই বিভিন্ন যানবাহনে রাজশাহী এসেছি, কারণ স্বৈরাচার সরকার যেখানেই বিএনপির সমাবেশ হয় সেখানেই পরিবহণ ধর্মঘট দেয়। কিন্তু মুক্তিকামী জনতাকে কোন বাধা দিয়েই আটকাতে পারবেনা।
বগুড়া গাবতলি পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলাম বলেন, সরকারের পায়ের নিচে মাটি নাই, ৩দিন অগেই ধর্মঘট দিয়েছে কিন্তু আমাদের আটকাতে পারেনি। মানুষ নদীরপাড়ে রাস্তায় স্টেশনে শুয়ে দাঁড়িয়ে রাত কাটিয়েছে। এগুলো আমাদের কষ্ট না এগুলো আমাদের বিজয়ের আনন্দ।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী বিভাগীয় সমাবশের সমন্বয়ক কমিটির দলনেতা সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু আমার সংবাদকে বলেন, সমাবেশের নির্ধারিত দিনের তিনদিন আগেই শতবাধা পেরিয়ে জনগণ রাজশাহীতে চলে এসেছে। শনিবার রাজশাহী হবে গণসমাবেশের নগরী। সমাবেশের মধ্যে দিয়ে স্বৈরচার হাসিনাকে পতনের বার্তা দেয়া হবে।
বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, মনে হচ্ছে কিছু পুলিশ বিএনপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে গেছে, সমাবেশকে ঘিরে তাদের অপতৎপরতা তাই প্রমাণ করে। রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ অভিমুখী আসা গাড়িগুলো ফিরিয়ে দিয়েছে। মানুষ পায়ে হেটে সমাবেশ আসছে। জনস্রোত রাজশাহীতে পৌঁছে গেছে ৩ তারিখ দেখবে জনসমুদ্র কাকে বলে। পুলিশ প্রশাসনের বদনাম হোক আমরা চাইনা। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। ধর্মঘটে আমাদের আটকাতে পারবেনা। আমাদের নেতাকর্মীরা পদ্মার পাড়ে খোলা আকাশের নিচে শুয়ে ছিলো তাদেরও পুলিশ সরিয়ে দিয়েছে। রান্নার হাঁড়ি পাতিল পুলিশ কেড়ে নিয়ে গেছে। বিএনপির এ নেতার দাবি বুধবার রাতের মধ্যেই ১ লাখ মানুষ রাজশাহীতে এসে পৌঁছেছে।
এদিকে যে কোন বিশৃঙ্খলা এড়াতে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুর সংখ্যক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছে।
এসএম