মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে আলু রোপণ শুরু করেছে কৃষকেরা। তবে বেশিরভাগ জমিতেই এখনো পানি রয়েছে। সে সব জমি থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য দিন রাত কাজ করছেন তারা। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের যে সব জমি শুকিয়ে গেছে, সে সব জমি প্রস্তুত করে আলু রোপণ শুরু করেছে অনেক কৃষক।
আর কয়েক দিন পর পুরোদমে আলু রোপণ করা হবে। এরই প্রস্তুতি হিসেবে এখন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হিমাগার ও বাজার থেকে বীজ আলু আনা, জমি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা, জমি প্রস্তুত হওয়ার পর আলু রোপণ করার জন্য চাষ করা হচ্ছে। এতে করে কৃষি জমি প্রস্তুত করতে দিন রাত ব্যস্ত সময় পাড় করছে কৃষকেরা।
মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়,উপজেলা রশুনিয়া ইউনিয়নের রশুনিয়া-ইমামগঞ্জ প্রধান সড়কের পূর্ব পাশে কৃষক আনন্দ ও উদ্দীপনা নিয়ে আলু রোপন শুরু করেছে। কেউ কেইল ফারছে, কেউ আলু মাটির নিচে রোপণ করছে। অনেক কৃষক জমি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নর কাজ করছেন। আবার কোথাও জমিতে সার ছিটাচ্ছে, কোথাও ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষ করছে। এছাড়া বেশিরভাগ নিচু জমি গুলো থেকে পানি শুকাতে কাজ করছে অনেক কৃষক। কৃষক মাঠে কাজ করছে আর বাড়িতে নারীরাও বীজ আলু কাটার কাজে ব্যস্ত রয়েছে। আগামী এক মাস ধরে আলু রোপণ চলবে।
উপজেলার কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আলু রোপণের আদর্শ সময় নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ২৫ দিন পর্যন্ত। গত বছর ৯ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এবছর ৯ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হতে পারে। গত বছরের তুলনায় ৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ কম হতে পারে।
রশুনিয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. আবুল বেপারী বলেন, আমি প্রায় ২১০ শতাংশ জমিতে আলু রোপণ করব। এ বছর মাত্র আলু রোপণ শুরু করেছি। গতবছর মোটামুটি আলুতে লাভবান হয়েছি। যেহেতু নিজের জমি তাই লাভের আশা নিয়ে আলু রোপণ শুরু করেছি।
আরেকজন কৃষক মো. ইয়াসিন বলেন, আমি মাত্র একটি জমিতে আলু রোপণ করেছি। তবে এখন পর্যন্ত আমার সব জমি রয়ে গেছে। কারণ হচ্ছে আমার জমিগুলোতে এখনো পানি রয়েছে। পানি সরানোর চেষ্টা চলছে। তাই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শ্রমিকরা কাজ করছে।
কয়েকজন কৃষক জানান, এবার সার,বীজ ও শ্রমিকসহ সব কিছুরই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এবার আলু রোপণ করে তারা লাভবান কম হবে। তারপরেও জমি পড়ে থাকবে সেজন্য তারা আলু রোপণ করবে। অনেকের আলু এখনো হিমাগারে রয়েছে, সেগুলো বিক্রি করতে পারছে না। তাই সরকারের সহযোগিতা কামনা করছে তারা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু সাঈদ শুভ্র বলেন, উপজেলার যে সকল কৃষকের জমি শুকিয়ে গেছে, ধান কাটা শেষ হয়ে গেছে, তারা জমি পরিষ্কার করে আলু রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়া অনেকেই আলু রোপণ শুরু করেছে। এবার এ উপজেলায় আলু চাষ কম হবে, সরিষাা চাষ বেশি হবে। আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি আলু ছাড়া যেন অন্যান্য ফসল চাষ করে। তবে লাভবান বেশি হবে।
এআই