বরিশালে ৫ মণ জাটকা জব্দ করেছে নৌ-পুলিশ। তবে এসব বিষয়ে কিছুই জানে না মৎস্য অধিদপ্তর। রাতের আঁধারে নৌ পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন গাড়ী থেকে মোটা অংকের উৎকোচ বাণিজ্য নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
বরিশাল সদর নৌ পুলিশের জব্দকৃত (ইলিশ) মাছ রাতের আঁধারে পোর্ট রোড মাছ বাজারে বিক্রয়। স্থানীয়রা মাছ ধরে কোতয়ালী মডেল থানার পুলিশকে জানালে ঘটনা স্থাল থেকে পরিত্যক্ত ইলিশ মাছ জব্দ করেন। ঘটনা স্থালে থাকা অলি মাঝী নামে এক যুবক পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনা স্থাল থেকে পালিয়ে যায় এবং পুলিশ ও স্থানীয়দের ম্যানেজ করতে রাজু মাঝী ও সুমন মোল্লা নামে দুই যুবক মোটা অংকের টাকা অফার করেন।
গত (৮ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর দপদপিয়া সেতুর টোল প্লাজায় বরিশাল সদর নৌ পুলিশের এএসপি দীন-ই আলম এর উপস্থিতিতে নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আঃ জলিল অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় বাস, ট্র্যাক, মিনি পিকাপসহ বেশকিছু গাড়ী নৌ পুলিশ চেক করে বিপুল পরিমাণ মাছ জব্দ করেন। উক্ত অভিযান শেষে থানায় আসার মাঝ পথে প্রায়ই ৩ মন জাটকা ইলিশ বিক্রি করার জন্য অলি মাঝী নামে এক ব্যক্তি পোর্ট রোড মাছ বাজারে নিয়ে আসেন।
অভিযুক্ত অলি মাঝির কাছে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আঃ জলিল স্যার আমাদের কাছে বিক্রয়ের জন্য দিছে, আবার কখনো বলে সোর্সদের খাবার মাছ দিছে।
এছাড়াও নৌ পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যেমন গত বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে চরকাউয়া খেয়াঘাট থেকে নুরু রাঢ়ী নামে এক বৃদ্ধ সুতার জাল নিয়ে চন্দ্রমোহন রওয়ানা দিলে, অলি মাঝী, রাজু মাঝী ও এস আই আঃ হাই, নুরুল আমিন সহ পাঁচ সাত জন মিলে বৃদ্ধকে মামলার ভয় দেখিয়ে দেহ তল্লাশি করে প্রায়ই বিশ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত (২ ডিসেম্বর) রাত ১২ টার সময় আমতলা মোড় থেকে বিপুল পরিমাণ মাছ আটকিয়ে থানার সামনে নিয়ে আসেন।
পরবর্তীতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রাতের আঁধারে ছেড়ে দিলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ হুমায়ূন কবির’কে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি থানার কর্মরত এস আই ইশানকে বলেন পূর্ণয়ার গাড়ীর মাছ জব্দ করেন। এবং তা সকালে গরীব অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়।
এ বিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নৌ থানার পুলিশ রাতের আঁধারে একাই অভিযান পরিচালনা করেন। এ বিষয়ে আমাদের তারা ডাকে না। তারা নিজেরাই নিজেদের সব কিছু মনে করেন।
কনস্টেবল মোঃ সাফির বিরুদ্ধে এক পথ শিশুকে দিয়ে বাজারের ব্যাগ ক্রয় করে জব্দকৃত মাছ রাতের আঁধারে বিভিন্ন লোকজন দিয়ে বিক্রি করার অভিযোগ উঠে। আটককৃত ইলিশ মাছ পোর্ট রোড বাজারে বিক্রয়ে সময়ে হাতে নাতে ধরে সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ দীন ই আলমকে জানালে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ বিষয়ে বরিশাল নৌ পুলিশের এসপি কফিল উদ্দিন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে দপদপিয়া সেতুর টোল প্লাজায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে আমি নিজেই উপস্থিতি থেকে বিভিন্ন এতিমখানায় মাছ বিতরণ করছি। কিন্তু রাতের আঁধারে জব্দকৃত মাছ বিক্রয়ের বিষয় আমি কিছুই জানি না, খোঁজ নিয়ে দেখতে আছি এধরণের কোনো ঘটনা ঘটলে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কেএস