শীতের মৌসুমে স্থানীয় বাজারে বেড়েছে খেঁজুরের রসের চাহিদা। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে খেঁজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছিরা। প্রতিদিন ভোর বেলায় গাছিদের কাছে খেঁজুরের রস খাওয়ার জন্য ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। অনেকেই খেঁজুরের রস সংগ্রহ করেন সু-স্বাধু পাটুলি গুড়ের জন্য।
উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের চারিপাড়া গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাছি মো. রমজান আলী খেঁজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছেন। রস সংগ্রহের জন্য খেঁজুর গাছের মাথার দিকে সাদা অংশ কেটে গাছের ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে চোঙ বসিয়ে দেওয়া হয়। রস সংগ্রহের জন্য মাটির কলসি ও প্লাস্টিকের বোতল ঝুলিয়ে রাখা হয়। বাদুড়ের সংস্পর্শ এড়াতে রস সংগ্রহের স্থানে বাঁশের বেড়া দিয়ে প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গাছি মো. রমজান আলী বলেন, প্রতিদিন সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গাছ থেকে মাটির কলসি ও প্লাস্টিকের বোতল থেকে রস সংগ্রহ করে থাকি। শীত মৌসুমে কাঙ্ক্ষিত রসের সন্ধান পাচ্ছি না। গ্রামে দিন দিন কমে যাচ্ছে খেঁজুর গাছের সংখ্যা। খেঁজুর গাছ সংরক্ষণের জন্য সরকারি ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে পিঠা-পুলি ও পায়েসে খেঁজুর রস ও গুড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সে সময় আমাদের লাভ একটু বেশি হয়। যে পরিমাণে শ্রম দিতে হয়, সে তোলনায় আমরা লাভ করতে পারি না। তবুও পেশাগত কারণে চালিয়ে যাচ্ছি এই ব্যবসা।
খেঁজুরের গাছ কম থাকায় এখন শুধু রস বিক্রি করা হয়ে থাকে। খেঁজুরের রস খেতে যারা আগ্রহী তারা ভোর হওয়ার সাথে সাথেই ছুটে আসেন চারিপাড়া গ্রামে। প্রতি গ্লাস রসের দাম ২০ টাকা ও প্রতি লিটার ৮০ টাকা।
এ প্রসঙ্গে চারিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সালাহ উদ্দিন নবাব জানান, এক সময় আমাদের গ্রামে অনেক খেঁজুর গাছ ছিল। গাছ গুলো থেকে প্রচুর রস কিনতে পাওয়া যেত। খেঁজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাওয়ার কারণে এটি এখন বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে। খেঁজুর গাছ রক্ষায় যথাযথ কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তাজরীনা তৈয়ব বলেন, খেঁজুরের রস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে কিনা সেটা নিশ্চিত হওয়া জরুরি। খেঁজুরের রস নিপা ভাইরাস মুক্ত রাখতে আগুনে ৭০ থেকে ৮০ ডিগ্রি সেলিসিয়াস তাপ মাত্রায় ফোটানো হলে এরমধ্যে থাকা জীবাণু, লার্ভাসহ সবই ধ্বংস হয়ে যায়। খেঁজুরের রস ফুটিয়ে পান করা নিরাপদ।
এসএম