স্বাভাবিক অর্থে মসজিদ কে নামাজ পড়ার স্থান হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু এটি এমনই একটি মসজিদ যার মধ্যে থাকবে ইমাম প্রশিক্ষন কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, মৃত ব্যক্তির গোসল করার স্থান, সভাকক্ষ, অফিস কক্ষ, ইসলামিক চর্চা কেন্দ্র, গেস্ট রুম, মহিলা ও পুরুষদের জন্য নামাজের পৃথক স্থান, মক্তব, ইমাম ও মুয়াজ্জিনের থাকার স্থান, গাড়ি পার্কিং, মহিলা ও পুরুষদের পৃথক ওজুখানা, লাইব্রেরী। বিষয়টি অবিশ^াস্য মনে হলেও বাস্তবে এমন মসজিদ দৃশ্যমান বরিশালে। যার অবস্থান বরিশাল নগরীর আমতলা মোড় এলাকায় ( পানির ট্যাঙ্কি সংলগ্ন)।
এই মডেল মসজিদ বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মসজিদ নির্মান প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের গণপূর্ত অধিদপ্তর। সারাদেশে ৫৬০ টি মডেল মসজিদ নির্মান প্রকল্প গ্রহণ করা হয় ২০১৮ সালে। প্রতিটি মসজিদের জন্য নির্মান ব্যয় নির্ধারন করা হয় ১৩ কোটি টাকা। কার্যকাল ছিলো দেড় বছর। কিন্তু প্রথমে জমি সংকট এবং পরবর্তীতে করোনা মহামারীর কারনে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা যায়নি নির্মান কাজ।
তবে বর্তমানে অধিকাংশ মসজিদেরই কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের তথ্য অনুযায়ী বরিশাল জেলায় মোট ১১ টি মডেল মসজিদ নির্মিত হবে। ১০ টি উপজেলায় একটি করে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় একটি। তবে জমি অধিগ্রহন জটিলতায় ৫ টি উপজেলায় এখনো মসজিদ নির্মান কাজ শুরু হয়নি। বাকি ৬ টি মসজিদের কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে বরিশাল সিটি এলাকায় আমতলার মোড়ে নির্মিত মসজিদটির কাজ শেষ পর্যায়ে। চলতি মাসের ৩০ তারিখ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত বিভাগের কাছে মসজিদটি হস্তান্তর করবে।
প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, এটি প্রধানমন্ত্রীর একটি অগ্রাধিকার প্রকল্প। কথা ছিলো টাকা দিয়ে জমি অধিগ্রহন নয় সরকারী বিভিন্ন সংস্থার নামে থাকা জমি দানের মাধ্যমে নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা। কিন্তু এই নিয়মে জমি অধিগ্রহন জটিলতায় জেলার ৫ টি উপজেলায় এখনো মসজিদ নির্মান কাজ শুরু হয়নি। বাকি যে ৬ টি মসজিদ নির্মানাধীন রয়েছে সেগুলোর কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে এই মসজিদগুলোর কাজ সম্পন্ন হবে।
এরমধ্যে সবার আগে শেষ হচ্ছে বরিশাল সিটি এলাকায় অবস্থিত মসজিদের কাজ। তিনি বলেন, মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জেম হবে সরকারীভাবে নিয়োগ প্রাপ্ত। বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় নির্মিত মসজিদটি নির্মান কাজ করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান বিল্ডার্স ও মেসার্স পলি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন। মোসার্স পলি ইঞ্জিনিয়ারিং এর দায়িত্বরত ঠিকাদার জিয়াউর রহমান বলেন, মসজিদটি সুনিপূনভাবে আধুনিক নির্মান শৈলীর মাধ্যমে নির্মান করা হয়েছে।
সম্পূর্ন কাজ শেষ। এখন চলছে শেষ পর্যায়ের লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। যা আগামী ২/৩ দিনের মধ্যে শেষ হবে। ৩০ ডিসেম্বর আমরা মসজিদ গণপূর্ত বিভাগের কাছে হস্তান্তর করবো। জানা গেছে ১৭০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১১০ ফুট প্রস্থের চতুর্থ তলা বিশিষ্ট এই মসজিদটি ৪৩ শতক জমির উপরে নির্মিত। ১০ হাজার ৩৯৬ বর্গফুট বিশিষ্ট মসজিদটির নিচতলায় গাড়ি পার্কিং ছাড়াও রাখা হয়েছে মৃত ব্যক্তির গোসল করানোর স্থান। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় নামাজের স্থানের পাশাপাশি নির্মিত করা হয়েছে ইমাম প্রশিক্ষন কেন্দ্র, গণশিক্ষা কেন্দ্র, সভাকক্ষ, অফিস কক্ষ, ইসলামিক চর্চা কেন্দ্র, গেস্ট রুম, মহিলা ও পুরুষদের জন্য নামাজের পৃথক স্থান, মক্তব, ইমাম ও মুয়াজ্জিনের থাকার স্থান, মহিলা ও পুরুষদের পৃথক ওজুখানা, লাইব্রেরী।
এবি