রসিক নির্বাচন: কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছেছে নির্বাচনি সরঞ্জাম

রংপুর ব্যুরো প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৬, ২০২২, ০৬:০৯ পিএম
রসিক নির্বাচন: কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছেছে নির্বাচনি সরঞ্জাম

কে বসবেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের চেয়ারে। ভোটের মাধ্যমে মেয়র ও কাউন্সিলরদের ভাগ্য পরীক্ষা হবে কাল মঙ্গলবার। প্রার্থীদের নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে সরব আলোচনা। সকাল থেকে প্রতিটি পাড়া মহল্লার অলিগলিতে দেখা গেছে কর্মীদের সরব পদচারণা। শেষ পর্যায়ে এসে ভোটাররা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন। এরমধে নির্বাচনী সরঞ্জাম কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছেছে। সোমবার দুপুরে নগরীর পুলিশ লাইন্স মাঠ থেকে সব কেন্দ্রের নির্বাচনী কর্মকর্তারা এসব সরঞ্জাম সংগ্রহ করেছেন।

এর আগে সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে নানা নির্দেশনা দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন ও মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা। বিশেষ এ ব্রিফিংয়ে ভোট চলাকালীন কেন্দ্রের ৪০০ মিটার এলাকায় ১৪৪ ধারা বজায় রাখা, নির্বাচনকে বিতর্কিত করে এমন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা, নগরীতে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ছয় স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। আমাদের কেন্দ্রে নির্বাচনি সরঞ্জাম চলে গেছে। সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। কর্মকর্তারা ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এছাড়া কেন্দ্রে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ ও আনসার বাহিনী কাজ করছে।’

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন। সকাল সাড়ে ৮টা বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে ভোট গ্রহণ হবে। ভোটে কোনোরকম অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, ‘নির্বাচনি এলাকাগুলোতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি, র‍্যাব ও পুলিশের টিম টহল দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও কিংবা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার জন্য নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে তার বিরুদ্ধে নির্দেশনা অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নুরে আলম মিনা বলেন, ‘আমরা এ নির্বাচনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে ফোর্স চেয়েছিলাম তার চেয়ে বেশি ফোর্স পেয়েছি। এ নির্বাচনে কেউ বিশৃঙ্খলা করার সুযোগ পাবে না। এটি রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠনের পর প্রথম সিটি নির্বাচন। তাই এ নির্বাচনকে মডেল নির্বাচন করতে আমরা বদ্ধপরিকর। এ নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যের কারণে নির্বাচনে কোনো ব্যাঘাত ঘটলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

রংপুর নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশ কর্মকর্তা, দুজন কনস্টেবল, দুইজন অস্ত্রধারী আনসার, ১০ জন আনসার-ভিডিপির সদস্যসহ মোট ১৫ জন; গুরুত্বপূর্ণ ৮৬টি ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশ কর্মকর্তা, তিনজন কনস্টেবল, দুইজন অস্ত্রধারী আনসার ও ১০ জন আনসার-ভিডিপির সদস্যসহ মোট ১৬ জন, নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে ১১ প্লাটুন বিজিবি, ১৭টি র‍্যাবের টিম, পুলিশ; এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মোবাইল ফোর্স, ১১টি স্ট্রাইকিং ফোর্স ও ছয়টি রিজার্ভ স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করছে। এছাড়া নির্বাচনে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৬ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।

২০৫ দশমিক ৭ বর্গকিলোমিটার এলাকার ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে রংপুর সিটি কর্পোরেশন গঠিত। এ নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৭০ জন। নির্বাচনে মেয়র পদে নয়জন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৮৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নির্বাচনে মেয়র পদে  জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা (লাঙ্গল), আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাড. হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া (নৌকা), আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিঃ লতিফুর রহমান মিলন (হাতি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল (হাতপাখা), জাসদের শফিয়ার রহমান (মশাল), জাকের পার্টির খোরশেদ আলাম (গোলাপ ফুল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান (ডাব), খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মন্ডল (দেওয়াল ঘড়ি) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি (হরিণ) ভোটে লড়বেন করছেন।

এসএম