নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় হাতিয়ার মাটিতে পান চাষের উপযোগী। তাই এরই মধ্যে পানের চাষ করে চাষিরা সাফল্য পেয়েছেন। তাই পান চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। পান চাষ করে প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করছেন তারা।
হাতিয়া চরকিং ইউনিয়নে সরেজমিন দেখা যায়, হাতিয়ায় এখন বাণিজ্যিকভাবে পান চাষ হচ্ছে। ফলন ভালো ও লাভজনক হওয়ায় পান চাষে এলাকার কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন। এতে দিন দিন পানের বরজের সংখ্যা বাড়ছে। হাতিয়া চরকিং ইউনিয়নের দাস পাড়াসহ আশপাশের এলাকায় প্রচুর পানের বরজ গড়ে উঠেছে। ধান, গম, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলের তুলনায় পান চাষে খরচ কম এবং লাভ বেশি। হাতিয়া উপজেলার মাটি পান চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় পানের ফলন বেশি পাওয়া যায়।
এছাড়াও এসব পানের বরজে কাজ করে অনেক যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলার অনেক হিন্দু সম্প্রদায়ের চাষিরা পান চাষ করে স্বাবলম্বী হবার এখন স্বপ্ন দেখছেন। পানের বরজ থেকে সারা বছর পান তুলে বিক্রি করা যায়। তাই সারা বছরই পান বিক্রি করে আয় করা যায়। তবে পান চাষিদের অভিযোগ, কৃষি বিভাগের লোকজন পানের বরজগুলো দেখতে যান না। এমনকি রোগবালাই হলে কোনো পরামর্শ দিয়ে সহায়তাও করেন না।
তারা বলেন, যদি নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হতো, তাহলে পান চাষে আরও অনেক কৃষক আগ্রহী হতেন, দাসপাড়া এলাকার পান চাষিদের মধ্যে অনেকে বলেন, আমরা প্রায় ৩৫-৪০ বছর যাবত পান চাষ করছি। আগে পান চাষি কম ছিল। বর্তমানে পান চাষির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
হরিপদ নামের পান চাষি বলেন, পান চাষ করে আমরা দীর্ঘদিন যাবত লাভবান হয়েছি। আমি আর আমার ভাইয়ের ১৫০টি পানের বরজ রয়েছে। হরি চন্দ্র দাস বলেন হাতিয়ার পান স্বাদে মিষ্টি ও সরস। এই এলাকার মাটি ভালো হওয়ায় পানের ফলন বেশি পান ও স্বাদের হয়। অন্য কোথাও থেকে পান না আসলে আমরা আরো বেশি দামে বিক্রি করতে পারতাম।
অনিল চন্দ্র দাস নামের আরেক পান চাষি বলেন, পান চাষে লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় পান চাষি বাড়ছে। আগে যেখানে ১০ জন পান চাষি ছিলো সেখানে এখন ২০ জনের ও বেশি চাষি রয়েছে।
শেফালী রানী দাস নামের এক নারী বলেন, পান চাষে পুরুষের পাশাপাশ আমরা নারীরাও সহযোগিতা করছি। আমি পান ভাঙি, পান ধুয়ে, গুছিয়ে দেই। স্বামী এই পান বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে। সেখান থেকে যা পায় তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে। আমরা কৃষিবিদদের কৃষিবিষয়ক ভালো পরামর্শ চাই। তাহলে আরো ভালো ফলন করতে পারবো বলে আমাদের বিশ্বাস।
কেএস